জোড়া ধাক্কা। এক দিকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা নিজের ও পরিবারের সমস্ত সম্পত্তির খতিয়ান জমা দিতে বিজয় মাল্যকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অন্য দিকে বৃহস্পতিবারই বকেয়া ঋণ শোধে তাঁর জমা দেওয়া প্রাথমিক প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার কথা জানাল ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির কনসোর্টিয়াম। ফলে কিংগ্ফিশার কর্তার সমস্যা আরও ঘোরালো হল বলে অনেকের ধারণা।
এ দিন শীর্ষ আদালতে দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ—
১. ভারত ও অন্যান্য দেশে মাল্য ও তাঁর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, শেয়ারহোল্ডিং ইত্যাদি সমেত যাবতীয় সম্পদের বিশদ বিবরণ দু’সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে।
২. জানাতে হবে কবে তিনি আদালতে হাজির হতে পারবেন।
৩. মাল্য যে ঋণ শোধে সত্যিই আগ্রহী, তার প্রমাণ হিসেবে আদালতের কাছে মোটা টাকাও আগাম জমা দিতে হবে তাঁকে।
এ দিন আদালতে ঋণদাতাদের দাবি ছিল, টাকা ফেরতের কথাবার্তা চালাতে মাল্যের হাজির থাকা জরুরি। ব্যাঙ্কের আইনজীবী বলেন, মাল্য যে আদৌ ঋণ ফেরত দিতে চান, তা প্রমাণ করতে তাঁকে হাজির হতে হবে। জানাতে হবে, কোথা থেকে টাকা জোগাড় করবেন, এ জন্য কার সঙ্গে কথা বলবেন ইত্যাদি। যেহেতু মাল্যের বকেয়া ঋণের অঙ্ক অনেকটাই বেশি (প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা), সে জন্য দেশে-বিদেশে মাল্য ও তাঁর পরিবারের লোকজনের কী কী সম্পদ রয়েছে, তা-ও বিশদে জানাতে হবে। মাল্যের আইনজীবীর দাবি, ২০১০ ও ২০১২ সালে ব্যাঙ্কের কাছে মাল্যের সম্পত্তির বিবরণ জমা দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালত অবশ্য সেই উত্তরে খুশি নয়। ঋণদাতাদের যুক্তি মেনে নিয়ে নতুন করে বিবরণ দিতে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত মাসেই আইনজীবীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে ৪,০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেন মাল্য। সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা মেটানোর কথা বলা হয়। তখন মাল্যের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, বিমানের ইঞ্জিন তৈরির একটি সংস্থার বিরুদ্ধে আনা ক্ষতিপূরণের মামলা জিতলে আরও ২,০০০ কোটি মেটানোর চেষ্টাও করা হবে। তবে এ ব্যাপারে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেননি তিনি। মাল্যের সেই প্রস্তাবই খারিজ করে দিয়েছে ১৭টি ব্যাঙ্কের কনসোর্টিয়াম। এ দিন ব্যাঙ্কের তরফে বলা হয়, বুধবার রাতেই প্রস্তাব খারিজের কথা মাল্যকে জানানো হয়েছে। তার পর সামান্য রদবদল করে ফের দ্বিতীয় দফায় প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তিনি। যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগামী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৬ এপ্রিল।
এ দিকে, ঋণের টাকা তুলতে মাল্যের কিংগ্ফিশার ভিলা বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি পাওয়ার জন্য গোয়া সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি। তা নতুন করে শোনার কথা জানিয়েছে আঞ্চলিক প্রশাসন। তবে মাল্যের ইউনাইটেড ব্রুয়ারিজ কারখানা উৎপাদন ক্ষমতা ২৫% বাড়াতে সায় পেয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy