মাঠ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে ফিগো কিংবা জ়িদানের জাদু চাক্ষুষ করতে ভরসা ছিল শুধু টিভি। মেসি-রোনাল্ডো কিন্তু এখন একই সঙ্গে হাতের তালুতেও।
ভারত বিশ্বকাপ ফুটবলের ধারেকাছে না থাকলেও দুনিয়ার তাবড় ও সেরা ফুটবলারদের পায়ের জাদু দেখতে রাতের পর রাত টিভির পরদায় চোখ রেখেছেন ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালি ফুটবলপ্রেমীদের বড় অংশ। কিন্তু শুধুমাত্র টিভির উপর নির্ভরতা অনেককে তা থেকে বঞ্চিতও করছে। এ বারের মতো বিকেল বা সন্ধ্যায় খেলা হলে কাজের ফাঁকে তা দেখার সুযোগ কম। লোডশেডিং হলেও খেলা দেখা বন্ধ। আবার কলকাতার কিছু এলাকায় কেব্ল পরিষেবার বিভ্রাটও বাধা তৈরি করেছে।
এই অবস্থায় বিকল্প দরজা খুলেছে দ্রুতগতির ইন্টারনেটে ভর করে হাতের স্মার্টফোনে সরাসরি খেলা দেখার (লাইভ স্ট্রিমিং) সুবিধা। সস্তায় বিপুল ডেটা ব্যবহারের সুযোগে অলিম্পিক্স, আইপিএলের পরে এ বার স্মার্টফোনে ধরা দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপও। মোবাইল ও ইন্টারনেটে (ওয়েবসাইট) বিশ্বকাপের খেলা সম্প্রচারের স্বত্বাধিকারী চ্যানেল সংস্থা আলাদা মোবাইল-অ্যাপ এনেছে। তাদের মাধ্যমে খেলা দেখাতে অ্যাপ এনেছে টেলি পরিষেবা সংস্থা জিয়ো ও এয়ারটেল। ফলে রাস্তায় বা কাজের ফাঁকে খেলা দেখা হাতের মুঠোয়।
শুধু সরাসরি খেলা নয়, খেলার মোড় ঘোরানো অংশও পরে ফেসবুক বা ইউটিউবে হই হই করে দেখছেন অনেকে। যেমন কেব্ল বিভ্রাটে স্পেনের বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর ফ্রিকিকের গোল না দেখার ক্ষোভ প্রশমন করেছে হোয়াটসঅ্যাপে পরে ঘুরতে থাকা ছোট্ট ভিডিয়ো। আবার মেসি নিয়ে স্বপ্নের ওঠাপড়াকে গুণমুগ্ধদের কাছে পৌঁছে দিতে তৈরি হয়েছে কয়েক মিনিটের ভিডিয়ো। এ সব দেখতে বড় ও ঝকঝকে পরদার মোবাইল ফোনের চাহিদা বাড়ছে বাজারে। সব মিলিয়ে এই নতুন বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে বিজ্ঞাপনী দুনিয়াও।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মোবাইল ফোনে ডেটা বা ইন্টারনেট সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ার ফলেই দ্রুত টিভির বাইরেও পা রাখছে খেলার মাঠ। আগে সারা মাসে যতটা ডেটা মিলত, এখন তার চেয়েও সস্তায় দৈনিক ততটাই মিলছে। সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিওএআই) ডিজি রাজন ম্যাথুজ শনিবার দিল্লি থেকে ফোনে জানান, গ্রাহকের কাছে দেখার মাধ্যম বাড়ছে। আমেরিকা ও ইউরোপে মোবাইল ফোনে সরাসরি কিছু সম্প্রচারের বাজার যথেষ্ট। তবে ভারতের তুলনায় মাসুল হার সেখানে বেশি বলে সংস্থাগুলির আয়ও বেশি।
যে সব টেলিকম সংস্থা আলাদা অ্যাপ তৈরি করেনি তাদের মধ্যে একটি সংস্থার এক কর্তার দাবি, নিজস্ব অ্যাপ তৈরি করলেও টেলিকম সংস্থাগুলিকে খেলার সরাসরি সম্প্রচারের জন্য স্বত্বাধিকারী চ্যানেলকে অর্থ দিতে হয়। তার চেয়ে গ্রাহক নিজের মোবাইলে চ্যানেলের অ্যাপ ডাউনলোড করেই খেলা দেখলে টেলিকম সংস্থাকে বাড়তি খরচের বোঝা বইতে হয় না।
মেসি, রোনাল্ডো, নাকি অন্য কারও হাতে উঠবে এ বারের বিশ্বকাপ, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত তাঁদের কারিকুরি মোবাইল ফোনের গ্রাহকের হাতের মুঠোয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy