চালু হওয়ার কথা ছিল পয়লা মে। কিন্তু কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সেই সময়সীমার মধ্যে নতুন আবাসন আইন চালু করতে পারল না রাজ্য সরকার। কবে চালু হবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সরকারি কর্তারাই।
রাজ্যের বক্তব্য, নতুন আইনের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করা যায়নি। প্রস্তাব-স্তরে আটকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি’ তৈরির কাজ, যার উপস্থিতি ছাড়া আইন চালু করাই সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাত, ওড়িশা, বিহার-সহ ১৩টি রাজ্য আইনটি তৈরি করেছে। ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, তেলঙ্গানার মতো কয়েকটি।
রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় আইনের ইতিবাচক দিকগুলি রাজ্য মেনে নিচ্ছে। তবে তা হুবহু মানা সম্ভব নয়। এ রাজ্যে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন আইন তৈরি হচ্ছে। রাজ্যে তা কবে চালু করা হবে, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি তিনি।
বিস্তর ভাবনাচিন্তা। জোরদার বিরোধিতা। কয়েক প্রস্ত সংশোধন। দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ রাজ্যসভার সায় পেয়েছে এই ‘রিয়েল এস্টেট বিল’। আইন কার্যকর করতে পয়লা মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। নির্দেশ মতো, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যগুলির ওই আইনের পথে হাঁটার কথা ছিল। সেই সময়সীমা বেড়ে দাঁড়ায় চলতি বছরের পয়লা মে। সেখানেও ‘ডাহা ফেল’
করল পশ্চিমবঙ্গ।
সমস্যা যেখানে
•
কেন্দ্রীয় আইন হুবহু মানছে না রাজ্য
•
নিজস্ব আইন কবে, এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় তা-ও
•
১৩ রাজ্য নয়া আইন তৈরি করলেও পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, তেলঙ্গানা ইত্যাদি
আইন তৈরির আগে তিনটি বিষয় নিয়ে নির্মাণ সংস্থা ও ক্রেতাদের মধ্যে বিরোধিতা তুঙ্গে উঠেছিল। পরে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে, মূলত ক্রেতাদের স্বার্থ-সুরক্ষার দিকটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আইন তৈরি হয়। যেমন, প্রথমত, বাড়ির কাঠামোগত ও ঘরের অনুমোদিত নকশা সংযোজন বা বদল করা যাবে না। বাড়ির সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য। ক্রেতার সায় ছাড়া কোনও বদল হবে না। দ্বিতীয়ত, বাড়ি ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে কোনও কাঠামোগত গলদ ধরা পড়লে, তা নিখরচায় সংস্কার করে দেওয়ার দায় প্রোমোটারের। এবং ওই ভুল নজরে আনার তিরিশ দিনের মধ্যে তা ঠিক করতে হবে। না হলে ক্রেতাকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তৃতীয়ত, বিক্রি করার সময়ে ‘কার্পেট এরিয়া’ বিবেচ্য হবে। অর্থাৎ, আসলে যতটা জায়গা বা ফ্লোর এরিয়া ব্যবহার করতে পারবেন ক্রেতা, শুধুমাত্র তারই দাম দেবেন তিনি। বাইরের দেওয়াল, লিফ্ট, ছাদ ইত্যাদির জায়গাকে যুক্ত করে ফ্ল্যাটের দাম নেওয়া যাবে না।
রাজ্যে আইন চালু না-হওয়ায় ক্রেতা ও বিক্রেতা, দু’ পক্ষই সমস্যায়। যাঁরা এই সময়ে ফ্ল্যাট কিনছেন, তাঁরা এর সুবিধা পাবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দে। আবার শিল্পের দাবি, আইনের সুবিধা পাওয়ার আশায় অনেকে কেনার সিদ্ধান্তই পিছোচ্ছেন। ফলে নোট সঙ্কটের জেরে তলানিতে ঠেকা আবাসন বাজার চাঙ্গা হতে পারছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy