সারা বছরের জন্য পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়, বরং লোকসভা নির্বাচনের বছরে অন্তর্বর্তী বাজেট (ভোট অন অ্যাকাউন্ট) পেশ হওয়াটাই প্রথা। আর নতুন সরকার গঠিত হলে তাদের অর্থমন্ত্রীর হাতে পেশ হয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তবে এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, তাতে এ বার প্রচলিত প্রথার কিছুটা বদল হলেও হতে পারে।
কয়েক দিন আগে অর্থ মন্ত্রক অন্যান্য মন্ত্রককে জানিয়েছিল, নতুন পরিষেবার জন্য আর কোনও খরচ করা চলবে না। অথচ তার মাত্র দু’দিনের মধ্যেই জানানো হয়, নতুন পরিষেবার জন্য অন্যান্য মন্ত্রক অর্থ মন্ত্রকের কাছে তহবিল চাইতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই ঘটনা স্পষ্ট ইঙ্গিত, এ বার প্রথা ভাঙা হতে পারে। এমনকি সেই ইঙ্গিত কয়েক দিন আগে দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে আপাতত দূরে থাকা অরুণ জেটলিও। ফলে এ বারের বাজেট একদম সাদামাঠা হবে, তা কিন্তু বলা যাচ্ছে না। আর সেই কারণেই বাজারের বিশেষ নজর থাকবে বাজেটের উপর। বিশেষত প্রথা ভেঙে কোনও বড় ঘোষণা মোদী সরকার করে কি না, তার দিকে তাকিয়ে থাকবেন লগ্নিকারীরা।
তার উপরে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশের সাত দিনের মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতি পর্যালোচনা করবে। নতুন গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের প্রথম ঋণনীতিতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে সুদে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্প মেয়াদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) কমায় কি না, তা দেখার জন্য আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করবে বাজার। আর লগ্নিকারীদের চোখ থাকবে বাড়ি-গাড়ি ঋণে সুদ কমে কি না, সে দিকে। ফলে সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারি বেশ ঘটনাবহুল হতে চলেছে বাজারের পক্ষে।
শেয়ার বাজার অবশ্য চঞ্চল ছিল গত সপ্তাহেও। বিভিন্ন কারণে ওঠাপড়া করে সূচকের খানিকটা মেদ ঝরেছে ঠিকই। তবে সেনসেক্স এখনও রয়েছে ৩৬,০০০-এর উপরেই। আপাতদৃষ্টিতে সেনসেক্স ও নিফ্টিকে দেখে মনে হতে পারে, বাজার বেশ ভাল জায়গাতেই আছে। কিন্তু ভিতরের দিকে তাকালে বোঝা যাবে মাত্র কয়েকটি বড় শেয়ারের ভরসাতেই বাজার এই উচ্চতায় বসে। এমনকি গত বছর ৩১ জানুয়ারি বিভিন্ন শেয়ারের যা দাম ছিল, তার বেশির ভাগ শেয়ারেরই বাজারদর এখন অনেকটা কম। তার উপরে সামনে লোকসভা ভোট, ব্রেক্সিটের মতো নানা ঘটনায় অস্থিরতা এখনই দূর হওয়ার নয়। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র সূচকের দিকে না তাকিয়ে, নজর রাখতে হবে নিজের হাতে থাকা শেয়ারের গতিবিধির উপরে।
ইতিমধ্যেই তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ করেছে একগুচ্ছ সংস্থা। কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ২৩% বেড়ে পৌঁছেছে ১,২৯১ কোটি টাকায়। আইসিআইসিআই প্রু লাইফের লাভ ৩৪% কমে নেমেছে ২৯৭ কোটি টাকায়। ১৮% বেড়ে এইচডিএফসি লাইফের নিট লাভ ছুঁয়েছে ২৪৫ কোটি। ইয়েস ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা নেমেছে ১,০০১ কোটিতে।
ইন্ডিগোর মুনাফা কমে হয়েছে ১৯০ কোটি। আইটিসি-র ক্ষেত্রে তা ৩.৮% বেড়ে পৌঁছেছে ৩,২০৯ কোটি টাকায়। এশিয়ান পেইন্টসের নিট লাভ ১৪% বেড়ে পৌঁছেছে ৬৪৭ কোটিতে। মারুতি-সুজুকির বিক্রি ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়ালেও, লাভ ১৭% কমে নেমেছে ১,৪৮৯ কোটি টাকায়। এলঅ্যান্ডটি-র নিট মুনাফা ৩৭% বেড়ে হয়েছে ২,০০০ কোটি টাকা। ফল প্রকাশের পালা চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তা-ও বাজারকে অস্থির রাখবে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy