ছয় লক্ষ কোটি টাকার বেশি অনুৎপাদক সম্পদের ভারে ধুঁকছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। দেশের অর্থনীতির এই ঘোরালো সমস্যা সমাধানে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে আরও বেশি ক্ষমতা দিতে এ বার ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করছে মোদী সরকার।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, আইন সংশোধনে সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষা না করে অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করা হতে পারে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সিলমোহরের পরেই সরকারি ঘোষণা হবে। তবে কেন্দ্র আশা করছে, খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতির সই মিলবে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৪৯ সালের ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশোধন করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে আরও ক্ষমতা দেওয়া হবে। যাতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক সরাসরি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে অনুৎপাদক সম্পদ নিলাম করা, অনাদায়ী ঋণ শোধ করার জন্য শর্ত আলগা করা, অন্য কোনও সংস্থাকে ভার দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছেন। তাঁদের ভয়, সিদ্ধান্তে ভুলচুকের ফলে রাজকোষে ক্ষতির অভিযোগ উঠলে ভবিষ্যতে তাদের সিবিআই তদন্তের মুখে পড়তে পারে। ব্যাঙ্ক-কর্তাদের দিকে যাতে সরাসরি আঙুল না উঠে, তার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একটি নজরদারি কমিটি তৈরি করতে পারে।
২০১৬-র মার্চ মাসের শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ ছিল ৫.০২ লক্ষ কোটি টাকা। ৩১ ডিসেম্বরে তা এসে পৌঁছয় ৬.০৭ লক্ষ কোটিতে। অনাদায়ী ঋণের বোঝার সমস্যা না মেটায় ব্যাঙ্কগুলি শিল্পের জন্য নতুন ঋণ দিতেও অনীহা বোধ করছে। ফলে নতুন লগ্নিতে সমস্যা হচ্ছে। হোঁচট খাচ্ছে আর্থিক বৃদ্ধি। অর্থ মন্ত্রক মনে করছে, মোট অনাদায়ী ঋণের অঙ্কটা বিরাট হলেও যে সব শিল্পপতি বা ব্যবসায়ী ঋণ নিয়েও শোধ করেননি, তাঁদের সংখ্যা খুবই কম। খুব বেশি ৪০ থেকে ৫০টি সংস্থার ঘরেই তা রয়েছে। এই ৪০-৫০টি অ্যাকাউন্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেই সিংহভাগ সমস্যার সমাধান হযে যাবে। ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশোধনের পাশাপাশি এ জন্য দুর্নীতি দমন আইনেও প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। ওই বিলটি ইতিমধ্যেই সংসদে পেশ হয়েছে। বাদল অধিবেশনেই তা পাশ হয়ে যাবে বলে সরকারের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy