Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
RBI

চড়া ঘাটতির ধাক্কায় দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা

ঋণনীতি ঘোষণা করছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। শুক্রবার মুম্বইয়ে।

ঋণনীতি ঘোষণা করছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। শুক্রবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৪
Share: Save:

অতিমারির সঙ্কট কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বাজেটে পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন খাতে সরকারি খরচের বরাদ্দ বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একই সঙ্গে রাজকোষ ঘাটতিও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে আগামী অর্থবর্ষে (২০২১-২২) তার হার বেঁধেছেন ৬.৮ শতাংশে। একাংশের আশঙ্কা, ঘাটতি এমন বাড়লে তা ঠেলে তুলবে মূল্যবৃদ্ধিকে। এই অবস্থায় শুক্রবার ঋণনীতি ঘোষণা করতে গিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ইঙ্গিত, মূল্যবৃদ্ধি আগামী দিনে তেমন বাড়বে না। যে কারণে চলতি অর্থবর্ষের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে তার পূর্বাভাস ৫.৮% থেকে কমিয়ে এ দিন ৫.২% করেছে তারা। কিন্তু তবু সুদ (রেপো রেট) কমায়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এতখানি ঘাটতি বইতে হলে মূল্যবৃদ্ধির হার আগামী দিনে বাড়বে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছেই। তাই এখনই সম্ভবত ঝুঁকি নিতে চাইছে না শীর্ষ ব্যাঙ্ক। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস নিজেও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার যুক্তিতেই সুদ স্থির রেখে সাহায্য করার কথা বলেছেন।

অতিমারির জেরে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরাতে কেন্দ্র রাজকোষ ঘাটতিকে তোয়াক্কা না-করে বড় মাপের খরচে মন দিক, লাগাতার এমনই সওয়াল করছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন বা নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অর্থনীতিবিদেরা। এ বার বাজেটে সেই রাস্তাতেই হেঁটেছে কেন্দ্র। কিন্তু ঘাটতি বাড়লে তো মাথা তুলবে মূল্যবৃদ্ধি। যা মধ্যবিত্তের হেঁসেলের খরচ বাড়াবে।

অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের মতে, ঘাটতি হয়তো কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু তা লাগামছাড়া হবে না। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অভিরূপবাবু বলেন, ‘‘সরকার খরচের যে পরিকল্পনা করেছে, তার জন্য অর্থের সংস্থান দু’টি ভাবে করতে পারে। হয় টাকা ছাপিয়ে, নয়তো বাজার থেকে ধার করে। খুব প্রয়োজন না হলে প্রথম রাস্তায় হাঁটবে না তারা। কাজেই পড়ে রইল বাজার থেকে ধার। এ জন্য ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের পরিকল্পনা তাদের। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণ করেও টাকা তুলবে। তাই বছর শেষে রাজকোষ ঘাটতি কিছুটা বাড়লেও, তা লাগামছাড়া হওয়ার আশঙ্কা কম। সে ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি থাকবে আয়ত্তেই।’’

তবে ভিন্ন মত ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ এবং ইউকো ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর বি কে দত্ত। তিনি বলেন, আর্থিক হাল ফেরাতে বাজেটে ঝুঁকি নিয়েই বড় খরচের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। এ জন্য ধার করা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণের পরিকল্পনা কতটা সফল হবে সন্দেহ আছে। কারণ, কেন্দ্র ধার করবে মূলত ঋণপত্র ছেড়ে। অভিজ্ঞতা বলছে, ওই ঋণপত্রের প্রধান ক্রেতা থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং‌ আর্থিক সংস্থাগুলি। কিন্তু ঋণপত্র কিনতে লগ্নি করতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলিতে শিল্পের ঋণ দেওয়ার টাকায় টান পড়বে না তো!

দত্ত বলেন, অর্থ সংস্থানের জন্য সরকারের দ্বিতীয় রাস্তা বিলগ্নিকরণ। চলতি অর্থবর্ষে যা লক্ষ্যের অর্ধেকও ছোঁয়নি। আগামী অর্থবর্ষে ছবিটা রাতারাতি পাল্টে যাবে মানা কঠিন। তাঁর দাবি ওই সংশয়গুলি সত্যি হলে রাজকোষ ঘাটতি আরও চড়বে। সে ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধিও ফের মাথা চাড়া দিলে ভুগবেন সাধারণ মধ্যবিত্ত।

প্রসঙ্গত, গত তিন বারের মতো এ বারও শুধু আগামী দিনে সুদ কমানোর পথ খোলা রাখার আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত থেকেছেন শক্তিকান্ত। রেপো রেট রয়ে গিয়েছে ৪ শতাংশে।

অন্য বিষয়গুলি:

Fiscal deficit RBI Inflation Shakti Kanta Das
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy