ইউনিটেক নিয়ে গত ক’দিন ধরে জাতীয় কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলটি) ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে যে টানাপড়েন চলছে, তা নতুন মোড় নিল বুধবার। সাময়িক ভাবে আবাসন সংস্থাটিকে অন্তত কিছুটা স্বস্তি দিয়ে ৮ ডিসেম্বর দেওয়া ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। যে নির্দেশে এনসিএলটি ইউনিটেক পরিচালন পর্ষদের আট ডিরেক্টরকে বরখাস্ত করেছিল। এবং সংস্থার দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানোর জন্য আপাতত পর্ষদে ১০ জন নমিনি নিয়োগের দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্রকে।
ক্রেতাদের সময়ে ফ্ল্যাট না-দেওয়া ও টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আবাসন সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের দায়ের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিটেকের প্রায় পুরো পর্ষদকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়ায়, মঙ্গলবারই এনসিএলটি-কে একহাত নেয় শীর্ষ আদালত। অসন্তোষ প্রকাশ করে বলে, ওই রায় দেওয়ার আগে তাদের মতামত নেওয়া উচিত ছিল।
বুধবারের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালও স্বীকার করেছেন, ইউনিটেক নিয়ে কেন্দ্রের এনসিএলটি-তে যাওয়া উচিত হয়নি। যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তার পরেই ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। ফলে ৩০ অক্টোবর তাদের নির্দেশ অনুযায়ী ক্রেতাদের ফেরানোর জন্য সংস্থার সম্পত্তি বেচে ৭৫০ কোটি টাকা জোগাড়ের পথে আপাতত কোনও বাধা রইল না ইউনিটেকের হাজতবন্দি কর্তা সঞ্জয় চন্দ্রর সামনে।
সময়-সারণি
• ২০০৮: টেলি শিল্পে পা ইউনিটেকের
• ২০০৮: ব্যবসা বিক্রি টেলিনরকে
• ২০১১: টুজি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার কর্তা সঞ্জয় চন্দ্র। পরে জামিন
• ২০১২: টেলি লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
• ২০১২: টেলি পরিষেবা থেকে বিদায় ইউনিটেকের
• ২০১৩: সমস্যা শুরু নির্মাণ ব্যবসাতেও
• ২০১৬: সময়ে ফ্ল্যাট না-দেওয়ার অভিযোগ। ১৫ কোটি টাকা জমার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
• এপ্রিল, ২০১৭: প্রতারণার দায়ে ধৃত সঞ্জয় ও অজয় চন্দ্র
• ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭: আট জন ডিরেক্টরকে বরখাস্তের নির্দেশ এনসিএলটি-র। ১০ নমিনি নিয়োগ করতে বলা হল কেন্দ্রকে
• ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭: এনসিএলটি-র নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ইউনিটেক
• ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭: তাদের মত না-নিয়ে নির্দেশ দেওয়ায় অসন্তুষ্ট শীর্ষ আদালত
• ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭: ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে স্থগিতাদেশ
এনসিএলটি-তে করা আবেদনে ইউনিটেক পর্ষদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের অভিযোগ ছিল, সংস্থাকে ভুল পথে পরিচালনা করা ও ডিরেক্টরদের বেআইনি ভাবে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে তহবিল সরানোর। তারা বলেছিল, যা পরিস্থিতি তাতে সংস্থা গোটানোই উচিত। কিন্তু তাদের আবাসনের প্রায় ২০ হাজার ক্রেতার কথা ভেবে ইউনিটেক হাতে নেওয়ার আর্জি জানানো হচ্ছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে ইউনিটেক বলে, ৮ ডিরেক্টরই বরখাস্ত হলে আদালতের নির্দেশ মেনে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা হবে কী করে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy