Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গবাদি পশু নিয়ে নতুন নিয়মে মেঘ চর্মশিল্পেও

গত দেড় বছর ধরেই গোহত্যা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচা চামড়ার জোগানে টান পড়েছে বলে অভিযোগ চর্মশিল্প মহলের। দেশ জুড়ে প্রায় ১৫০০ ট্যানারি মার খাচ্ছে। সব মিলিয়ে এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ১০ লক্ষের বেশি মানুষের রোজগার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ১৪:০০
Share: Save:

গবাদি পশু কেনাবেচায় লাগাম টেনে ধরেছে কেন্দ্র। তাদের নতুন নিয়মে নতুন করে আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে ১১০০ কোটি ডলারের চর্মশিল্পে।

গত দেড় বছর ধরেই গোহত্যা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচা চামড়ার জোগানে টান পড়েছে বলে অভিযোগ চর্মশিল্প মহলের। দেশ জুড়ে প্রায় ১৫০০ ট্যানারি মার খাচ্ছে। সব মিলিয়ে এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ১০ লক্ষের বেশি মানুষের রোজগার। কাঁচা চামড়ার সরবরাহে টান পড়ায় ধুঁকছে কলকাতা থেকে কোলাপুর, চেন্নাই থেকে কানপুরের মতো চর্মশিল্পের বিভিন্ন কেন্দ্র।

কাঁচা চামড়ার অভাব পূরণ করতে আমদানি বাড়ছে বলে দাবি কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টসের পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজার। তিনি বলেন, ‘‘ঘাটতি মেটাতে তৈরি-চামড়ার আমদানি বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ এক লাফে চামড়ার রফতানি বাড়িয়ে নিয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।’’ তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, বছরে ভারতীয় চর্মশিল্পের ৩০০ কোটি বর্গফুট চামড়া প্রয়োজন।

আমদানির বাড়বাড়ন্তে রুজি-রুটি হারাচ্ছে কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াকরণে যুক্ত লক্ষাধিক শ্রমিক। কাঁচা চামড়া থেকে ধাপে ধাপে তৈরি-চামড়ার উৎপাদন প্রক্রিয়াটাই বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। ফলে দেশ জুড়ে প্রায় দু’লক্ষ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

আমদানি বাড়ছে বলে বাড়ছে উৎপাদন-ব্যয়ও। জুনেজার মতে, এই খরচ বাড়ছে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ। তাল মিলিয়ে বাড়ছে দাম। চর্মশিল্পের আশঙ্কা, এই চড়া দামের জন্যই বিশ্ব বাজারে পাকিস্তান-চিন-বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে যাবে ভারত। বিশ্ব বাজারে চর্মশিল্পের হাল খারাপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপের মতো বাজারে মন্দার দরুন চর্মশিল্পের রমরমা কমেছে। আর সেই বাজারে কাঁচা মালের অভাবে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ভারত।

কানপুর, চেন্নাই, কোলাপুরের মতো ঘোর সমস্যায় পড়েছে বাংলার প্রধান চর্মশিল্প কেন্দ্র বানতলা। চামড়ার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে চর্মশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচা চামড়ার মাত্র ২০ শতাংশ স্থানীয়। বাকি ৮০ শতাংশ অন্য রাজ্য থেকে আসে। এ রাজ্যের মোট রফতানির ৭৫ শতাংশ ‘গ্লাভস’ বা দস্তানা। টাকার অঙ্কে এ রাজ্যের মোট ব্যবসার ৫৫ শতাংশ দস্তানার দখলে। এই দস্তানা তৈরির কাঁচামাল মোষের চামড়া। মূলত উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র থেকে এই কাঁচামাল আসত। দস্তানা উৎপাদন ইতিমধ্যেই মার খেতে শুরু করেছে।

গবাদি পশু কেনাবেচার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নতুন নিয়ম রূপায়ণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই নয়া নিয়মের বিরোধিতা করতে পারে রাজ্য। এই ভরসাতেই আপাতত বুক বাঁধছে পশ্চিমবঙ্গের চর্মশিল্প মহল।

অন্য বিষয়গুলি:

Leather Industry cattle slaughter ban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE