ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাড়তি ভাঁড়ার ভাগাভাগি নিয়ে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর বিমল জালানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের কমিটি কী সুপারিশ করে, তা জানতে অপেক্ষা চলছে এপ্রিল থেকে। বুধবার সূত্রের খবর, অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে তাদের রিপোর্ট। সুপারিশে উদ্বৃত্ত ভাঁড়ার কেন্দ্রকে হস্তান্তরের কথাই বলা হয়েছে। রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্য পূরণে যার দিকে বহু দিন ধরেই নজর কেন্দ্রের। এবং যে ভাগ দাবি করা নিয়ে বার বার তরজায় জড়িয়েছে তারা।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে এই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা ছিল এপ্রিলে। সদস্যদের মতানৈক্যের জেরে তা হয়নি। সূত্রের দাবি, এ দিন দিল্লিতে বৈঠকের পরে রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়। শীঘ্রই জমা হবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে।
সমস্ত খরচ বাদে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে যে বাড়তি টাকা থাকে, তারই ভাগ চায় কেন্দ্র। তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। ওই ভাগ সরকারকে দেওয়া হবে কি না, দিলে কত— এই সব কিছু নিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রের সংঘাত তুঙ্গে পৌঁছেছিল প্রাক্তন গভর্নর উর্জিত পটেলের আমলে। অনেকের মতে, এ নিয়ে কেন্দ্রের দাবিতে আপত্তি জানানোতেই ইস্তফা দিতে হয় পটেলকে। তখন শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে ছিল ৯.৬ লক্ষ কোটি টাকা।
এক ঝলকে
কেন্দ্র-শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার ভাগের যুক্তিগ্রাহ্যতা-সহ সব দিক খতিয়ে দেখার জন্য তৈরি হয়েছিল জালান কমিটি। বিবেচনা করেছে কতটা বাড়তি সম্পদ মজুত রাখা উচিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। খতিয়ে দেখেছে কেন্দ্রকে কতটা ডিভিডেন্ড দেওয়া উচিত তা-ও। সূত্রের খবর, বুধবার সেই রিপোর্টই চূড়ান্ত হয়েছে। শীঘ্রই যাবে আরবিআইয়ের কাছে।
কমিটির সুপারিশ
সূত্রের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাড়তি ভাঁড়ার কেন্দ্রকে দেওয়া হবে (তবে তা কতটা জানানো হয়নি)। ৩ থেকে ৫ বছর ধরে পাঠানো হবে সেই তহবিল। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ভাঁড়ার ভাগের পর্যালোচনা হবে।
কেন্দ্র বলেছিল
ভিডেন্ড হিসেবে মুনাফার ভাগ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দেয়ই। সঙ্গে ভাঁড়ারে থাকা বিপুল ‘টাকাকড়ির’ একাংশও দেওয়া উচিত। ডলার, সোনা ইত্যাদি মিলিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের বাড়তি ভাঁড়ার তাদের মোট সম্পদের প্রায় ২৬%-২৭%। অথচ বাকি দুনিয়া মানে তা ১৬%-১৭% থাকাই যথেষ্ট। তাই এই সম্পত্তির কতটা কে নেবে, তার বিধি সংশোধন জরুরি।
আরবিআইয়ের যুক্তি ছিল
মুনাফার ভাগ সরকার পায়। তাই শীর্ষ ব্যাঙ্কের বাড়তি ভাঁড়ারে হাত দেওয়া উচিত নয়। কারণ, অর্থনীতির ঝড়ঝাপ্টা সামলাতে আর্থিক ভাবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পোক্ত থাকা জরুরি।
বিরোধীরা তোপ দাগে, ভাঁড়ারের ভাগ পেতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের উপর চাপ সৃষ্টি করছে কেন্দ্র। সেই অভিযোগ ওড়ালেও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি ছিল, অন্য বহু দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের তুলনায় আরবিআই ভাঁড়ারে বেশি সম্পদ মজুত রাখে।
জালান কমিটির রিপোর্ট চূড়ান্ত হওয়ার পরে সরকারি মহলের আশা, এই বাড়তি ভাঁড়ারের ভাগ কেন্দ্রকে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। চলতি অর্থবর্ষে যে হার ৩.৩%। ডিভিডেন্ড হিসেবেও পেতে পারে ৯০,০০০ কোটি টাকা। আগের অর্থবর্ষে যা ছিল ৬৮,০০০ কোটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy