প্রতীকী ছবি।
চাষিদের সুরাহা দেওয়ার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী বাজেটেই তাঁদের জন্য অর্থের বন্দোবস্ত করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুক্রবার বাজেট পেশ করে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, দু’হেক্টর পর্যন্ত কৃষি জমি থাকলে তার মালিকদের বছরে তিন কিস্তিতে দেওয়া হবে মোট ৬,০০০ টাকা। ইতিমধ্যেই এই অঙ্ক কম বলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর এ বার এই ঘোষণা কতটা কার্যকর করা সম্ভব হবে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করল তা নিয়েই।
আইনজীবীদের একাংশের আশঙ্কা, এ ক্ষেত্রে জমির প্রকৃত মালিককে খুঁজে বার করাই সমস্যা হতে পারে। তাঁদের মতে, বিশেষত সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ে ধাক্কা খেতে পারে প্রথম দফায় টাকা দেওয়ার পরিকল্পনাই।
বৃহস্পতিবারই জমির মালিকানা নির্ধারণ নিয়ে এক মামলার রায়ে শীর্ষ আদালত বলেছে যে, নাম খারিজের (মিউটেশন) সুবাদে কারও নাম ল্যান্ড রেভিনিউ রেকর্ডে নথিভুক্ত হলেও, তিনিই যে জমির প্রকৃত মালিক, তা প্রমাণ হয় না। মিউটেশনের ফলে নথিভুক্ত ব্যক্তি কেবল জমির খাজনা দেওয়ার যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারেন। মালিক হিসেবে নয়। আইনজীবীদের আশঙ্কা, ওই রায়ের পরে বহু ক্ষেত্রে জমির প্রকৃত মালিককে খুঁজে বার করাই সমস্যা হবে। যার ফলে প্রকল্প কার্যকর করতে গেলে শুরু হতে পারে মামলার ঢেউ।
শনিবার কলকাতায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এন কে পোদ্দার বলেন, প্রকল্পের টাকা দেওয়ার জন্য জমির মালিককে চিহ্নিত করতে কেন্দ্রের পক্ষে ল্যান্ড রেভিনিউ রেকর্ডকেই হাতিয়ার করা ছাড়া বিকল্প পথ পাওয়া কঠিন। কারণ, বহু ক্ষেত্রেই বিকল্প বার করায় সমস্যা রয়েছে।
শুধু তা-ই নয়। প্রশ্ন উঠছে, একাধিক ব্যক্তি যৌথ ভাবে একটি জমির মালিক (কো-ওনার) হলে, সে ক্ষেত্রে কী হবে। যেমন ধরা যাক, একটি কৃষি জমির মালিক তিন ভাই। সে ক্ষেত্রে কি তাঁদের প্রত্যেককেই ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে? নাকি এক জনই টাকা পাবেন? আর সে ক্ষেত্রে কোন জন তা পাবেন, সেটাই বা ঠিক হবে কী করে?
পোদ্দারের মতে, ‘‘এই রকম বহু প্রশ্ন রয়েছে প্রকল্পটিকে ঘিরে। বিশেষত সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের পরে ল্যান্ড রেভিনিউ রেকর্ডের নথিতে উল্লেখিত নামের ভিত্তিতে মালিকানা নির্ধারিত করতে চাইলে, মামলার বন্যা বইবে বলেই আমার আশঙ্কা। অন্য দিকে, বিকল্প হিসেবে দলিলের ভিত্তিতে মালিকানা নির্ধারণ করতে গেলে প্রকল্প কার্যকর করতে যে সময় লাগবে, তাতে তা চালুর উদ্দেশ্যই মাটি হয়ে যেতে পারে।’’
অনেকে অবশ্য মনে করছেন, সরকার সব দিক বিচার করেই প্রকল্প কার্যকর করবে। কিন্তু এই ধরনের নানা প্রশ্ন কাটিয়ে কী ভাবে তা সম্ভব হবে, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy