কোন পথে: অসমের কাছাড়ে হিন্দুস্তান পেপার কারখানা। নিজস্ব চিত্র
দুশো সত্তর দিনের জায়গায় কেটে গিয়েছে ৩০৪ দিন। কিন্তু এখনও জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে (এনসিএলটি) হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের ভাগ্য নির্ধারিত হয়নি। অভিযোগ, রুগ্ণ সংস্থাটির কর্মীদের ২৭ মাসের বেতন বাকি। মেটানো হয়নি অবসরপ্রাপ্তদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা। ২০১৮ সাল থেকে অবসর নেওয়া কর্মী এবং অফিসারদের হাতে আসেনি গ্র্যাচুইটিও।
কাগজ তৈরির সংস্থা হিন্দুস্তান পেপারের দু’টি কারখানা রয়েছে অসমে। কলকাতায় তাদের সদর দফতর। কর্মী সংখ্যা ১,৩০০। ঘটনা হল, দেউলিয়া বিধি অনুযায়ী কোনও সংস্থা এনসিএলটিতে গেলে ২৭০ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা (রেজলিউশন) করার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই সময়সীমা পার করার পরে আরও এক মাস কেটে গিয়েছে। ফলে কেন্দ্রের মালিকানাধীন সংস্থাটির ভবিষ্যৎ কোন পথে গড়াচ্ছে তা বলতে পারছেন না কেউই।
কর্মীদের বকেয়া বেতন আংশিক ভাবে মেটানোর জন্য ২০১৮ সালের অগস্টে তহবিল মঞ্জুরের একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছিল সংসদে। ঠিক হয়েছিল ৯০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। অভিযোগ, এর পরেও ওই টাকা মঞ্জুর করেনি কেন্দ্র। যাদের হাতে রয়েছে সংস্থার ১০০% শেয়ার।
সংস্থার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, সম্প্রতি এনসিএলটিতে শুনানির সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এখন নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি চালু রয়েছে। ফলে আপাতত টাকা মঞ্জুর করা সম্ভব নয়। কিন্তু কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, ওই টাকা দেওয়ার প্রস্তাব তো সংসদে পাশ হয়েছিল প্রায় আট মাস আগে! তা হলে এত দিনেও টাকা মঞ্জুর করে বেতন মেটানো যায়নি কেন? এর কোনও ব্যাখ্যা অবশ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এনসিএলটিতে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সংস্থার চেয়ারম্যান এ এন সোনসালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
একটা সময়ে উৎপাদিত পণ্যের যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কেন রুগ্ণ হয়ে পড়ল হিন্দুস্তান পেপার? অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিসকে (এসএফআইও) এর কারণ খোঁজার নির্দেশ দিয়েছে এনসিএলটি।
সূত্রের খবর, হিন্দুস্তান পেপার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হলেও তার পুনরুজ্জীবন বা সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য পরিকল্পনা (রেজলিউশন প্ল্যান) ট্রাইবুনালে জমা দেয়নি কেন্দ্র। সংস্থাটিকে হাতে নিতে কেউ রাজি কি না, তা জানতে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন রেজলিউশন প্রফেশনাল। তিনটি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। এই অবস্থায় সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন কর্মীরা। কবে বেতন পাওয়া যাবে, উত্তর নেই তারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy