Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভোটের দিকে তাকিয়ে জিএসটি-তে কিছু ছাড়

জিএসটি নিয়ে ক্ষুব্ধ গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের মন জিততে আজ মাঠে নামলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে জিএসটি-তে সুরাহা দেওয়া হলো মূলত মধ্যবিত্ত, সাধারণ মানুষকেই। তাদের ব্যবহারের জিনিসপত্রেই কমানো হলো করের বোঝা।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ছবি:পিটিআই।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ছবি:পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

সস্তা হলো সালোয়ার-কামিজ থেকে রুটি-নিমকি। কমলো দোকানদার, ছোট ব্যবসায়ীদের হিসেবনিকেশের বোঝা।

জিএসটি নিয়ে ক্ষুব্ধ গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের মন জিততে আজ মাঠে নামলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে জিএসটি-তে সুরাহা দেওয়া হলো মূলত মধ্যবিত্ত, সাধারণ মানুষকেই। তাদের ব্যবহারের জিনিসপত্রেই কমানো হলো করের বোঝা।

দেশের অর্থনীতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় গত কয়েক দিনে তীব্র হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্‌হা, অরুণ শৌরী। উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত-সহ সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার রীতিমতো ছবি-গ্রাফিক্স তুলে ধরে সমালোচনার জবাব দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু অর্থনীতিতে যে একটা মন্দা রয়েছে, সে কথা অস্বীকার করতে পারেননি। সে দিন মোদী আশ্বাস দিয়েছিলেন, একটু সময় লাগবে, কিন্তু হাল শুধরে দেবেন তিনি। আজ জেটলির হাত ধরে সেই কাজের সূচনা হলো।

গত কাল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে কেরল থেকে ডেকে পাঠিয়ে, জেটলি ঢাকা থেকে দিল্লি ফেরামাত্র তলব করে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি সূত্র বলছে, মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের উষ্মার আঁচ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিলক্ষণ টের পাচ্ছেন। দু’মাসের মধ্যে মোদীর রাজ্য গুজরাতে ভোট। মাঝারি মাপের ব্যবসায়ীরা বিজেপির বরাবরের ভাল ভোট ব্যাঙ্ক। অথচ জিএসটি নিয়ে সব থেকে বেশি আন্দোলন হয়েছে মোদীর রাজ্যেই। অমদাবাদ, সুরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। করের হার নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন তাঁরা। ভোটের আগে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমন যে আশু প্রয়োজন, তা বুঝছেন বিজেপি নেতারা। সেই লক্ষ্যেই আজ সিন্থেটিক, রেয়ন, নাইলনের সুতো, তন্তু, জরির কাজের মতো একগুচ্ছ ক্ষেত্রে জিএসটি-র করের কমানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: মোদীর ভিটেয় ধর্মীয় সহিষ্ণুতার কুমির ছানা

জিএসটি চালুর পর থেকেই কর মেটানো, রিটার্ন ফাইলের হিসেবনিকেশ রাখতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন ব্যবসায়ী, ছোট ও মাঝারি সংস্থার মালিকরা। তাঁদের সুরাহা দিতে প্রতি মাসের বদলে তিন মাসে এক বার কর মেটানো ও রিটার্ন ফাইলের বন্দোবস্ত হয়েছে। যাকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন।

জিএসটি নিয়ে পর্যালোচনা করতে বসে বাড়ির মহিলাদের কথাও মনে রেখেছেন জেটলি। কারণ বিজেপির হিসেবে, ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদীকে মহিলারাও বিপুল হারে ভোট দিয়েছিলেন। তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়ে আজ সালোয়ার স্যুটে জিএসটি-র হার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ হয়েছে। সুতো, জরির কাজে কর কমার ফলে শাড়ির দামও কমবে।

গরিব, মধ্যবিত্তর কথা ভেবেই রুটি-চাপাটি, আইসিডিএস-এ দেওয়া খাবার, ভাজাভুজি-নিমকিতেও জিএসটি-র হার কমানো হয়েছে। রেস্তোরাঁর বিলের খরচ কী ভাবে কমানো যায়, তা খতিয়ে দেখা হবে।

একেবারেই ছোট ব্যবসায়ী বা দোকানদার, যাদের বছরে ব্যবসার পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকারও কম, তারা এমনিতেই জিএসটি-র বাইরে। কিন্তু তা-ই বলে কোনও বড় সংস্থা যাতে তাদের থেকে জিনিসপত্র কেনা বন্ধ না করে দেয়, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

তবে শেষ পর্যন্ত পাখির চোখ যে গুজরাতের ভোটই থেকেছে, তা অবশ্য স্পষ্ট। কারণ, গুজরাতিদের সকাল-সন্ধের জলখাবারের অঙ্গ খাকরাতেও জিএসটি কমেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE