নরেন্দের মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশ মতো না চললে আগামী মাস থেকে কেন্দ্রের হিসাব মতোই অর্থ বরাদ্দ করা হবে রাজ্যগুলিকে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও দাবিদাওয়ায় আর কান দেওয়া হবে না, দাবি সরকারি সূত্রের।
এমজিএনআরইজিএ অর্থাৎ একশো দিনের কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্যে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছিল। তারা ফিরে এসে কোথায়, কী ধরনের খামতি রয়েছে, সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বিভিন্ন নির্দেশের মধ্যে অন্যতম একটি ছিল, কাজ দেখাশোনা করতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলতে হবে। তাতে স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক, গ্রাম-প্রধান এবং সরকারি অফিসারেরা থাকবেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে ৩৩৪০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ৮৫৯টি-তে এই গ্রুপখোলা হয়েছে।
গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের রিপোর্টে যদি দেখা যায় এখনও খামতি রয়ে গিয়েছে, তা হলে অক্টোবরে দ্বিতীয় দফার অর্থ মঞ্জুরের সময় শ্রমিকদের মজুরির বাজেটের ভিত্তিতেই টাকা বরাদ্দ করা হবে। একশো দিনের প্রকল্পে রাজ্য কাজের চাহিদার ভিত্তিতে যে অর্থ দাবি করে, তাতে কান দেওয়া হবে না।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, এতে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ কতখানি খরচ হবে, তার ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে অর্থ বরাদ্দ হয়। পরে রাজ্যগুলি যদি জানায় কাজের চাহিদা বাড়ছে, তখন মঞ্জুর হয় বাড়তি টাকা। রাজ্য সরকার নিয়ম মেনে না চললে ওই বাড়তি অর্থের দাবিকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র।
একশো দিনের কাজ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই তৃণমূল-বিজেপির রাজনৈতিক লড়াই চলছে। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন প্রকল্পে ৬৫৬১ কোটি টাকা বকেয়া থাকার কথা। তৃণমূলের সাংসদেরা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের কাছেও দরবার করেছেন। উল্টো দিকে বিজেপি নেতারা গিরিরাজের কাছে গিয়ে অভিযোগ তুলেছেন প্রকল্পে দুর্নীতির।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্র এক মাস আগে রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল— নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে ‘সোশ্যাল অডিট’ করাতে হবে। অভিযোগ শুনতে প্রতিটি জেলায় লোকপাল নিয়োগ করতে হবে। শ্রমিকদের হাজিরার রেকর্ড, ছবি সরকারি অ্যাপে দিতে হবে। জেলাশাসক থেকে বিডিও-দের প্রতি মাসে ১০টি কাজের জায়গায় পরিদর্শনে যেতে হবে। সেখান থেকে অ্যাপে উপস্থিতি নথিভুক্ত করতে হবে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের দেখাশোনার জন্য খুলতে হবে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এই সব ক্ষেত্রে কী কী কাজ হয়েছে, এ বার তারই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy