বিপাকে: অভিযোগের তির তাঁর দিকেও। চন্দা কোছর। ছবি: রয়টার্স
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের সিইও চন্দা কোছরের স্বামী দীপক কোছর, ওই ব্যাঙ্কের বেশ কিছু অফিসার ও ভিডিয়োকন গোষ্ঠীর কর্ণধার বেণুগোপাল ধুতের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তব্যুরো (সিবিআই)। ইতিমধ্যেই আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কয়েক জন অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। উল্লেখ্য, প্রমাণ হাতে আসার পরে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত শুরুর জন্য এফআইআর করে সিবিআই। প্রাথমিক তদন্ত ঠিক তার আগের স্তর।
গত ২০১২ সালে ভিডিয়োকনকে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ৩,২৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া নিয়েই এই প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে সিবিআই। সেখানকার অফিসারদের সূত্রে খবর, ওই ঋণ সংক্রান্ত নথিপত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখছে তদন্তব্যুরো। কোনও ‘স্বজনপোষণ’ বা ‘ফৌজদারি’ অপরাধ নজরে এলে, তা তদন্তের জালে আনা হবে। এ ধরনের কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে অন্যদের সঙ্গে জেরা করার জন্য সমন পাঠানো হতে পারে চন্দা ও তাঁর স্বামী দীপককেও। ভিডিয়োকন ওই ঋণ পাওয়ার পরে দীপকের সংস্থা নিউ পাওয়ার রিনিউয়েব্ল্সে ধুত নিজের আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান মারফত ৬৪ কোটি লগ্নি করেন বলেও অভিযোগ।
স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে ২০টি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার একটি জোট ভিডিয়োকনকে যে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছিল, তার মধ্যেই আছে আইসিআইসিআইয়ের দেওয়া ধার। এই ঋণ ‘পাইয়ে দেওয়া’ হয়েছে কি না, তা নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে চন্দার বিরুদ্ধে, যা খতিয়ে দেখছে মূলধনী বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-ও। সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি চন্দা কোছরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তিনি নাকি ভিডিওকন গোষ্ঠীর কর্ণধার বেণুগোপাল ধুতকে ২০১২ সালে ৩,২৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে কিছু অনৈতিক সুবিধা দিয়েছিলেন। আর তা দেওয়া হয়েছিল চন্দার স্বামী দীপক কোছর ও তাঁর পরিবারকে ধুতের বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়ার পরিবর্তে। রিপোর্টে দাবি করা হয়, ভিডিয়োকনের সেই ধারের ৮৬ শতাংশই (২,৮১০ কোটি) শোধ হয়নি এবং সংস্থার অ্যাকাউন্টটিকে ২০১৭ সালে অনুৎপাদক সম্পদ হিসেব ঘোষণাও করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ
• ২০১২ সালে ভিডিয়োকনকে ৩,২৫০ কোটি ঋণ মঞ্জুরিতে হাত ছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কর্ণধার চন্দা কোছরের।
• ঋণ মিলতেই চন্দার স্বামী দীপক কোছরের সংস্থা নিউ পাওয়ার রিনিউয়েব্ল্সে ভিডিয়োকন কর্তা বেণুগোপাল ধুত অন্য এক প্রতিষ্ঠান মারফত ঢালেন ৬৪ কোটি।
• ২০০৮-এ ধুতের সঙ্গে মিলে নিউ পাওয়ার রিনিউয়েব্ল্স তৈরি করেছিলেন দীপক ও তাঁর দুই আত্মীয়।
• যে প্রতিষ্ঠান নিউ পাওয়ারে ৬৪ কোটি ঢালে, সেটির মালিকানাও হস্তান্তর হয়েছে দীপকের নেতৃত্বে গড়া ট্রাস্টে।
• দীপকদের সুবিধা দেওয়ার পরিবর্তেই ধুতকে ঋণের সুযোগ পাইয়ে দিয়েছিলেন চন্দা।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক অবশ্য কোছরের বিরুদ্ধে ভিডিয়োকনকে ঋণ মঞ্জুরে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছে। বলেছে, ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ কাজের ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে পর্ষদ নিশ্চিত হয়েছে যে, সেখানে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা নেই কোনও কর্মীর। তা তিনি যে পদেই থাকুন না কেন। আইসিআইসিআইয়ের দাবি, ঋণ মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কমিটি, চন্দা একা নন। ফলে স্বজনপোষণ বা স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন ওঠে না।
২০০৮ সালে দীপক ও তাঁর দু’জন আত্মীয়ের সঙ্গে নিউ পাওয়ার রিনিউয়েব্ল্স তৈরি করেন ধুত। নিজের যে প্রতিষ্ঠান মারফত ধুত নিউ পাওয়ারে ৬৪ কোটি টাকা ঢালেন, সেটির মালিকানাও পরে হস্তান্তর করা হয় দীপকের নেতৃত্বে গড়া ট্রাস্টের হাতে। অভিযোগ, ৯ লাখ টাকায় তা হাতবদল হয়। সব ক্ষেত্রেই অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy