Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
ঘুষের অঙ্ক ছুঁতে পারে ৪ কোটি

সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কাণ্ডে এ বার পাকড়াও ভূষণ স্টিল কর্তা

সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কাণ্ডে অবশেষে ধরা পড়লেন ভূষণ স্টিল কর্তা নীরজ সিংঘল। অন্য দিকে, এই ঘটনায় ঘুষের অঙ্ক ৪ কোটি টাকা ছুঁতে পারে বলে বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিল সিবিআই। বাড়িতে কয়েক দিন আগে সিবিআই হানার পরে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা সিংঘলকে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর আগে বুধবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতি স্বর্ণ কান্ত শর্মা সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক ঘুষ কাণ্ডের অন্যতম মুখ্য অভিযুক্ত সিংঘলের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন। শর্মা জানান, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর এবং জনগণের বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় হয়েছে এই ঘটনায়।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৫
Share: Save:

সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কাণ্ডে অবশেষে ধরা পড়লেন ভূষণ স্টিল কর্তা নীরজ সিংঘল। অন্য দিকে, এই ঘটনায় ঘুষের অঙ্ক ৪ কোটি টাকা ছুঁতে পারে বলে বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিল সিবিআই।

বাড়িতে কয়েক দিন আগে সিবিআই হানার পরে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা সিংঘলকে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর আগে বুধবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতি স্বর্ণ কান্ত শর্মা সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক ঘুষ কাণ্ডের অন্যতম মুখ্য অভিযুক্ত সিংঘলের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন। শর্মা জানান, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর এবং জনগণের বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় হয়েছে এই ঘটনায়। প্রসঙ্গত, দুই শ্যালক বিনীত ও পুণিত গোধার সঙ্গে যোগসাজশে আইন ভেঙে মূলত ভূষণ স্টিল ও প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজকে বাড়তি ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শনিবার গ্রেফতার হন সিল্ডিকেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুধীর কুমার জৈন।

তবে ওই ৫০ লক্ষ টাকা শুধু ভূষণ স্টিলের থেকেই ঘুষ বাবদ নেওয়া হয়েছিল বলে অনুমান সিবিআইয়ের। তাদের দাবি, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক যাতে ভূষণের বাকি পড়া ১৩৪ কোটি টাকার ঋণ অনুৎপাদক সম্পদ হিসাবে ঘোষণা না-করে, তাই জৈনকে ওই টাকা দেওয়া হয়। তবে দফায় দফায় আরও অর্থ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজের থেকে তাঁর নেওয়া ঘুষের অঙ্ক ৩.৫ কোটি টাকাতেও দাঁড়াতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সিবিআই। সত্যিই সেটা হলে মোট ঘুষের অঙ্ক ৪ কোটি টাকা ছোঁবে। সংস্থাগুলি কয়লা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

আগেই সিবিআই পাকড়াও করেছে প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজের সিএমডি বেদ প্রকাশ অগ্রবাল এবং সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিপুল অগ্রবালকে। প্রকাশের পক্ষ থেকে অবশ্য বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কাণ্ডে সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে দাখিল করা বিবৃতিতে সংস্থার দাবি, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের কাছে কোনও ঋণ এই মুহূর্তে সংস্থার নেই। এর আগে কোনও ঋণ বাকিও পড়েনি। এই মামলায় প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজকে অহেতুক ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ সংস্থার। সংস্থার আরও দাবি, তাদের হাতে নগদ ও সম্পদের পরিমাণ যথেষ্ট। তাই দৈনন্দিন খরচ মেটাতে আপাতত তাদের কোনও অসুবিধা হবে না। সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কাণ্ডে তাদের জড়িয়ে ফেলার কোনও প্রভাব সংস্থার কাজকর্ম বা মুনাফার উপর পড়বে না বলে দাবি করেছে সংস্থা।

প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কাছ থেকে সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কর্তা জৈন ৩.৫ কোটি টাকার ঘুষ নিয়ে থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়ে সিবিআই জানিয়েছে: সংস্থাকে ২ কোটি ডলার (প্রায় ১২০ কোটি টাকা) বৈদেশিক বাণিজ্যিক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি এই উৎকাচ নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে সিবিআই। তবে এ ব্যাপারে প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজকে পাঠানো ই-মেল বার্তার কোনও উত্তর মেলেনি। এ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের এক পদস্থ অফিসার জানান, “জৈন কী ভাবে সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তার পদে নিযুক্ত হলেন, তা খতিয়ে দেখছি।”

এ দিকে ভূষণ স্টিল কর্তা সিংঘলের জনৈক কর্মী এখনও ধরা পড়েননি বলে সিবিআই সূত্রের খবর। তাঁর মাধ্যমেই ভোপালে পৌঁছে যেত ঘুষের টাকা। ভোপালের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পবন বনশল সংস্থাগুলির সঙ্গে চূড়ান্ত লেনদেন পর্ব সারতেন। বড়সড় কর্পোরেট সংস্থায় ঋণ দেওয়ার ব্যবসা করার জন্য তিনি খুলেছিলেন নিজস্ব সংস্থা। ভূষণ স্টিল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুরুষোত্তম টোটলানির সহায়তা নিত। টোটলানি ওই অর্থ তুলে দিত জৈনের আত্মীয় বিনীতের হাতে। টোটলানিও এখনও ধরা পড়েননি।

সিংঘল গ্রেফতার হওতায় আগে এ দিনই তাঁর বিরুদ্ধে অ-জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতি স্বর্ণ কান্ত শর্মা। পাশাপাশি, পুরুষোত্তম টোটলানির বিরুদ্ধেও একই ভাবে জারি হয় অ-জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE