Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পদে থেকেই চ্যালেঞ্জ নিতে রাজি অরবিন্দ

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সুব্রহ্মণ্যনকে তিন বছরের জন্য অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করা হয়। আগামী ১৬ অক্টোবরই তাঁর সেই মেয়াদ ফুরোচ্ছিল। সুব্রহ্মণ্যন আর থাকতে চাইছিলেন, তা নয়। বিরোধী শিবির অভিযোগ তুলেছিল, নোট বাতিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে তাঁকে সামিল করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনকে মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পথে আরও এক বছর থাকতে রাজি করালেন অরুণ জেটলি।

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সুব্রহ্মণ্যনকে তিন বছরের জন্য অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করা হয়। আগামী ১৬ অক্টোবরই তাঁর সেই মেয়াদ ফুরোচ্ছিল। সুব্রহ্মণ্যন আর থাকতে চাইছিলেন, তা নয়। বিরোধী শিবির অভিযোগ তুলেছিল, নোট বাতিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে তাঁকে সামিল করা হয়নি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী জেটলি চাইছিলেন, তিনি থাকুন।

আজ অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পদে সুব্রহ্মণ্যনের মেয়াদ এক বছরের জন্য বাড়ানো হল। আর্থিক বৃদ্ধির হারে অধোগতি, বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ঘাটতি বৃদ্ধি থেকে লগ্নিতে খরার মতো অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে অরুণ জেটলি চাইছিলেন, সুব্রহ্মণ্যন থেকে যান। চাপের মুখে নরেন্দ্র মোদীও এখন নিজেই সব সিদ্ধান্ত না-নিয়ে অরুণ জেটলিকে অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য ত্রাণ প্রকল্প বা ‘স্টিমুলাস প্যাকেজ’ তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছেন। সেখানেও সুব্রহ্মণ্যন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন।

আজ তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণার পরে সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে ভালই লাগবে। দেশের অর্থনীতিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা কাজ করছি। দেখতে হবে, কী ভাবে এগোনো যায়। আর্থিক বৃদ্ধি, লগ্নি, রফতানি— এগুলিকে চাঙ্গা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আগামী কয়েক দিনেই জানা যাবে, কেন্দ্রীয় সরকারের কী পরিকল্পনা রয়েছে।’’

• আর্থিক বৃদ্ধি, লগ্নি, রফতানিকে টেনে তোলা
• ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা কমাতে জোর
• টাকার দাম বেশি চড়তে না-দেওয়া
• সরকারি খরচ বাড়ানোকেই অন্যতম হাতিয়ার করা

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দেরি না করে আগামী সপ্তাহেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই ঘোষণা হতে পারে। আজ সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। বৃদ্ধির হার কমছে। লগ্নি, রফতানি বাড়ছে না। ব্যাঙ্কের ঘাড়ে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা রয়েছে। তাই টাকার বিনিময় মূল্য, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির মতো হাতিয়ার দিয়ে এই সমস্যাগুলিকে আক্রমণ করতে হবে। আবার রাজকোষের ভারসাম্য যাতে বিগড়ে না-যায়, তা-ও দেখতে হবে।’’

নর্থ ব্লকের কর্তাদের মতে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলে, চলতি বছরের শুরুতে ডলারের তুলনায় টাকার দাম বেড়ে যাওয়ায় রফতানি কমেছে। আমদানিও বেড়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নোট বাতিলের ধাক্কা এবং জিএসটি চালুর জের। এই ত্র্যহস্পর্শে কারখানার উৎপাদন, অলঙ্কার, বৈদ্যুতিন পণ্য, বস্ত্র, রাসায়নিক, ওষুধ— সব ক্ষেত্রেই ধাক্কা লেগেছে এবং আমদানি যথেষ্ট বেড়েছে। এখন তার ফলেই এক দিকে বৃদ্ধির হার কমেছে, অন্য দিকে বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ঘাটতি ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। তবে সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি, সব উন্নয়নশীল অর্থনীতিই এই সমস্যার মুখোমুখি। কারণ বিদেশি লগ্নি আসার ফলে টাকার বিনিময় মূল্যে চাপ পড়ছে।

নর্থ ব্লকের অর্থনীতিবিদদের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টাকার দর বৃদ্ধিতে লাগাম পরানোর চেষ্টা করছে। রফতানির পরিমাণও সামান্য বেড়েছে। কিন্তু গত ছয় থেকে নয় মাসে ডলারে টাকার দর চড়ার ফলে ভারতের রফতানি পণ্য বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছিল। সেই ক্ষতি এখনও পূরণ হয়নি। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াইয়ে তাই সুদের হার আরও কমানো, টাকার অত্যধিক চড়া দরে রাশ টানা এবং বাজারে চাহিদা তৈরি করার মতো একাধিক দাওয়াই থাকা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Arvind Subramanian Chief Economic Adviser
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE