Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ক্ষুব্ধ শিল্পমহল • দাবি আইন সংশোধনের

ফের গ্রেফতার অ্যামওয়ে কর্তা

চিট ফান্ড বন্ধের আইন না-মেনে ব্যবসা করার অভিযোগে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার গ্রেফতার হলেন ভারতে অ্যামওয়ে-র এমডি-সিইও উইলিয়াম এস পিঙ্কনি। কেরলের পর এ বার পিঙ্কনিকে গ্রেফতার করল অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ। আপাতত তাঁকে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ওই রাজ্যের একটি জেলা আদালত। খারিজ করা হয়েছে তাঁর জামিনের আবেদন। অন্ধ্রের কুর্নুলের পুলিশ সুপার জানান, সংস্থার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের সূত্রেই গুড়গাঁও থেকে গ্রেফতার হয়েছেন পিঙ্কনি।

গ্রেফতারের পর কুর্নুল থানায় পিঙ্কনি। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

গ্রেফতারের পর কুর্নুল থানায় পিঙ্কনি। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৪ ০২:০১
Share: Save:

চিট ফান্ড বন্ধের আইন না-মেনে ব্যবসা করার অভিযোগে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার গ্রেফতার হলেন ভারতে অ্যামওয়ে-র এমডি-সিইও উইলিয়াম এস পিঙ্কনি।

কেরলের পর এ বার পিঙ্কনিকে গ্রেফতার করল অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ। আপাতত তাঁকে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ওই রাজ্যের একটি জেলা আদালত। খারিজ করা হয়েছে তাঁর জামিনের আবেদন। অন্ধ্রের কুর্নুলের পুলিশ সুপার জানান, সংস্থার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের সূত্রেই গুড়গাঁও থেকে গ্রেফতার হয়েছেন পিঙ্কনি। মঙ্গলবার তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে কুর্নুলে। তিনি বলেন, দেশে চিট ফান্ড বন্ধের আইন ভাঙা ছাড়াও প্রতারণার অভিযোগে এই গ্রেফতার। যে অভিযোগে এর আগেও এক বার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল কেরল পুলিশ।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিল্পমহল। অ্যামওয়ে-সহ ডিরেক্ট সেলিং সংস্থাগুলির প্রশ্ন, যে সংস্থা পণ্য তৈরি করে সরাসরি বিক্রি করে, প্রাইজ চিটস্‌ অ্যান্ড মানি সার্কুলেশন স্কিমস (ব্যানিং) অ্যাক্ট বা চিট ফান্ড বন্ধের আইনে বার বার তাদের কেন হেনস্থা করা হবে? কেন এ ভাবে গ্রেফতার হবেন এ দেশে তাদের শীর্ষ কর্তা? সার্বিক ভাবে শিল্পমহলেরও প্রশ্ন, কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পরেই পিঙ্কনির এই গ্রেফতার লগ্নিকারীদের কাছে কী বার্তা পাঠাবে? বিশেষত যেখানে মোদী-সরকার বিনিয়োগ-বন্ধু হবে বলে আশা করছে শিল্পমহল। বণিকসভা ফিকি-র আবার আশঙ্কা, মার্কিন বহুজাতিকটির শীর্ষ কর্তার এই গ্রেফতারের ছায়া পড়তে পারে ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্কেও।

এই ঘটনার নিন্দা করে ইন্ডিয়া ডিরেক্ট সেলিং অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, অবিলম্বে অর্থ লগ্নি সংক্রান্ত ওই আইন (পিসিএমসিএস) সংশোধন করে সরাসরি পণ্য বিক্রির (ডিরেক্ট সেলিং) ব্যবসার জন্য আলাদা আইন চালু হোক।

বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের এই বাজারে তাদের কার্যকলাপের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যের কথা বারে বারেই স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছে ডিরেক্ট সেলিং সংস্থাগুলি। দাবি, ব্যবসার ধরন হিসেবে তারা পুরোদস্তুর বিক্রি ও বিপণন সংস্থা। যারা পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। তবে বিপণি মারফত নয়, সরাসরি গ্রাহকের দরজায়। সাধারণত এই ধরনের সংস্থার পণ্য বা পরিষেবা কেউ বেচতে পারলে, কমিশন পান। আবার নিজের অধীনে থাকা লোকেরাও ওই একই কাজ করতে পারলে, কমিশনের একটা মোটা অংশ জমা পড়ে তাঁর পকেটে।

শিল্পমহলের দীর্ঘ দিনের দাবি, এ ভাবে ব্যবসা করা ডিরেক্ট সেলিং সংস্থাগুলির সঙ্গে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাজ-কারবারের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই তাদের জন্য অবিলম্বে আলাদা আইন করা হোক। ঠিক হোক যে, এ ধরনের সংস্থার নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে থাকবে। তারা মনে করে, ঠিকঠাক আইন না-থাকার কারণেই এ ভাবে গ্রেফতার হতে হল পিঙ্কনিকে। এমন একটি বহুজাতিকের ভারতীয় ব্যবসার কর্ণধার হয়েও, যারা এ দেশে পণ্য বেচছে ১৯৯৮ সাল থেকে। কারখানা গড়তে লগ্নি করেছে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন-সহ ১০৮টি দেশে ছড়িয়ে যাদের ব্যবসা। অ্যামওয়েও বিবৃতিতে এ দিন বলেছে, ভারতের আইনি ব্যবস্থার উপর ভরসা থাকলেও, এ ভাবে হঠাত্‌ করে শীর্ষ কর্তাকে গ্রেফতারির ঘটনায় তারা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তাদের দাবি, সরকারি নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গেই ব্যবসা করে সংস্থা।

ইন্ডিয়ান ডিরেক্ট সেলিং অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল ছবি হেমন্তের অভিযোগ, পণ্য তৈরি করে সরাসরি তা বিক্রির ব্যবসা সম্পর্কে আইনি স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তাই এই সংক্রান্ত সব অভিযোগকেই পি সি এম সি এস আইনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তার আওতায় যুক্ত করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ওই আইন আর্থিক প্রকল্প নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ডিরেক্ট সেলিং ব্যবসার সঙ্গে তার আদৌ কোনও যোগ নেই। ফলে অবিলম্বে তা সংশোধন করা জরুরি। নইলে এ ধরনের অভিযোগ উঠতেই থাকবে। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে কয়েক বছর ধরে সরকারের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে অ্যামওয়ে-সহ সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল।

অন্য বিষয়গুলি:

amway amway chief arrested amway chief arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE