প্রতীকী চিত্র।
দুর্নীতির ভাইরাস সিস্টেমে ঢুকলে মুশকিল। জরুরি প্রকল্প বানচাল। উন্নয়ন অচল। যন্ত্র বিকল হলে সচল করা যায়। দুর্নীতি রোখা কঠিন। অবৈধ টাকা রোজগারে যারা বেপরোয়া, সতর্ক করেও তাদের লাভ হয় না। তারা নজরদারির বেড়া টপকাতে জানে। মানে না কোনও মানা। তাদের জন্যই প্রকল্প বন্ধ রেখে তদন্ত চালাতে হচ্ছে। হিসেবে বিস্তর গোলমাল। বাজেটে টান। এর থেকে নিস্তার পেতে রাস্তা একটাই। কোনও কিছুই আর ম্যানুয়াল নয়, সব ডিজিটাল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। দুর্নীতি রুখতে যন্ত্রই ভরসা। সব মানুষের ওপর আর আস্থা রাখা যাচ্ছে না। দায়িত্বটা নিয়েছেন হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়। সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা তিনি। সাত বছরের পরিশ্রমে দেশটাকে ডিজিটাল করার পর সরকারি কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ যান্ত্রিক করতে চাইছেন। টেন্ডারের ফর্ম তোলা নিয়ন্ত্রণ থেকে জমা দেওয়াতে গোলমালের শুরু। সরকারি অফিসে গিয়ে সেটা করার আর দরকার নেই। কোনও আধিকারিকের সাহায্য লাগবে না। ই-টেন্ডারিংয়েই সেটা হবে। টেন্ডারের ঝাড়াই বাছাই বৈদ্যুতিন ব্যবস্থাতেই। কারও হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকছে না। টেন্ডারের তথ্য আগাম চালাচালির রাস্তা বন্ধ। নির্দিষ্ট দিনে লক খুলবে বিশেষ কমিটি। যে বা যারা বরাত পাবে, ই-মেলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি অফিসে ছোটাছুটির দরকার নেই।
সরকারি কাজে শম্বুক গতি আর নয়, এবার আরবি ঘোড়ার ছুট। টেবিলে পড়ে থেকে ফাইলে ধুলো জমার দিন শেষ। ই-ফাইলিংয়ের ব্যবস্থা। ফাইল চলবে দ্রুত, কাজ শেষ হবে নির্দিষ্ট দিনে। শ্রম দিবসের সাশ্রয়। সাধারণের ভোগান্তি শেষ। কোনও কাজের জন্য সরকারি অফিসে দিনের পর দিন ধর্না দেওয়ার দরকার নেই। ফাইলের কাজ শেষ করতে দেরি হলে ব্যবস্থা। সময় পেরোলে গাফিলতির অভিযোগ উঠবে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। শো-কজ করা হবে। যথার্থ জবাব না মিললে শাস্তি। আবার পুরস্কারের দিকও থাকছে। ভাল কাজের উপর পয়েন্ট। বেশি পয়েন্ট পেলে পদোন্নতি, বেশি ইনক্রিমেন্ট। পুরস্কার বা তিরস্কার কোনও আধিকারিকের ইচ্ছে-অনিচ্ছের উপর নির্ভর করবে না। ই-ফাইলিং সিস্টেমই বেছে নেবে সেরাদের।
জন্ম তারিখ রেকর্ড করা থেকে পাসপোর্ট পর্যন্ত জালিয়াতির সুযোগ থাকছে না। সবই ইলেকট্রনিক সিস্টেমে যুক্ত। তথ্য গোপন বা জাল তথ্য পেশ করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা। অভিযুক্ত বা সাহায্যকারীর কেউই রেহাই পাবে না। পদ্ধতিটা শুধু শহরে নয় গ্রামেও। নব নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদকেও কাজ করতে হবে ই-সিস্টেমে। ২০১৮তে, মানে আর দু’বছরে, প্রতিটি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেবল চলে যাবে। লক্ষ্যটা পরিষ্কার। ৫ মেগাবাইটে মুহুর্তের সংযোগে কাজে গতি আসতে বাধ্য। দুর্নীতি মুক্তিও সম্ভব। সরকারের কেন্দ্রীয় ওয়েব পোর্টালে সরকারি ফর্ম দেওয়া-নেওয়া চলবে। পর্যবেক্ষকের নজর থাকবে সবেতেই। কোন প্রকল্পের কাজ কত দূর এগোল জানা যাবে ই-মনিটরিংয়ে। ফাঁক দেখলেই ব্যবস্থা। দুর্নীতি তাড়াতে এ ভাবেই ডিজিটালে জোর হাসিনা সরকারের।
আরও পড়ুন:
প্রত্যাখ্যানের ‘বদলা’! এখন দুনিয়া দাপাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy