এক দিকে ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেন সরকারের দখলে থাকা প্রায় প্রতিটি সামরিক ঘাঁটিকে নিজেদের দখলে নিয়ে ফেলেছে রাশিয়া। আর ঠিক সেই সময়ই জি-৭ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে আমস্টারডামে পৌঁছলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। উদ্দেশ্য, রাশিয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা।
আজ প্রথমে আমস্টারডামের একটি জাদুঘর পরিদর্শন করেন ওবামা। সেখান থেকে যান দ্য হেগের পরমাণু নিরাপত্তা সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে। আমেরিকার সঙ্গে বিশ্বের মোট ৫২টি দেশ যোগ দিয়েছে ওই সম্মেলনে। রাতের দিকে জি-৭ দেশগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ওবামার। ক্রাইমিয়া ও ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে এক প্রস্ত আলোচনা হবে। জাদুঘর থেকে বেরিয়েই আজ ওবামা বলেন, “আমেরিকা ও ইউরোপ যৌথ ভাবে ইউক্রেন সরকারের পাশে আছে।” অর্থাৎ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠিন কিছু পদক্ষেপের ইঙ্গিত শুরুতেই দিয়ে রেখেছেন ওবামা।
তবে ওবামা মুখে যতই মস্কোর উপর আরও নিষেধাজ্ঞার কথা বলুন না কেন, বাস্তবে সেটা করা বেশ কঠিনই। ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান ই রাইস গত সপ্তাহে আকারে-ইঙ্গিতে তা স্বীকারও করে নিয়েছিলেন। একটি সাক্ষাৎকারে রাইস জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলির নিজেদের মধ্যেই মতবিরোধ আছে। কারণ, প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য আর্থিক বিষয়ে রাশিয়ার উপর কম- বেশি নির্ভর করতে হয় অনেককেই। সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন চাইলেও একজোট হয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ হবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে।
তবে বারাক ওবামা এত সহজে হাল ছাড়তে রাজি নন। ধনী দেশের সংগঠন জি-৮ থেকে ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সেই মতো জি-৭ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে আলোচনা করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার ব্যবস্থাও নিচ্ছেন তিনি। ওবামা আজ আরও বলেছেন, “রাশিয়া এত দিন যা করেছে তার মূল্য তাকে পেতেই হবে। তার জন্যই আমেরিকা ও ইউরোপ একত্র হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব রুশ অর্থনীতিতে পড়তে বাধ্য।”
এরই মধ্যে আজ ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেন সরকারের একটি নৌসেনা ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায় রুশ বাহিনী। আজ সকালে ফোডোসিয়ার ওই ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার থেকে প্যারাট্রুপারদের নামতে দেখেছেন অনেকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ইউক্রেনীয় নৌসেনারা প্রথমে নিজেদের অস্ত্র রেখে ওই ঘাঁটি থেকে বেরোতে চাইছিলেন না। কিন্তু শেষমেশ রুশ বাহিনীর কাছে নতিস্বীকার করতে হয় তাঁদের। কিয়েভে ইউক্রেনের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, ক্রাইমিয়ায় তাদের প্রায় প্রতিটি সামরিক ঘাঁটিই এখন রাশিয়ার দখলে চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় ক্রাইমিয়া থেকে বাকি সেনাদের সরিয়ে নিয়ে আসার ঘোষণাও করেছে কিয়েভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy