রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথকে বিদায় জানাতেও বিদেশ থেকে আসছেন শতাধিক রাজা-রানি, রাষ্ট্রনেতা ও তাঁর স্ত্রীরা। ফাইল ছবি
১৯৬৫ সালের পরে এই প্রথম। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের প্রয়াণের পরে তাঁর শেষকৃত্যে সারা বিশ্ব থেকে শতাধিক রাষ্ট্রনেতার সমাগম হয়েছিল ব্রিটেনের মাটিতে। সাতান্ন বছর পরে, ব্রিটেনের প্রিয় রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথকে বিদায় জানাতেও বিদেশ থেকে আসছেন শতাধিক রাজা-রানি, রাষ্ট্রনেতা ও তাঁর স্ত্রীরা। অনুষ্ঠানের দিনে ভিড় এড়াতে তাই এখন থেকেই কোমর বেঁধেছে ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রক। তারা এক চিঠিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, আগামী সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর রানির শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন না কোনও রাষ্ট্রনেতা। এমনকি সকলকে দেওয়া যাবে না ব্যক্তিগত গাড়িও। তাই পশ্চিম লন্ডনের এক অজ্ঞাত স্থান থেকে তাঁদের সকলের জন্য থাকছে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা। সেটিতে চড়েই রানির শেষকৃত্যে অংশ নিতে যাবেন পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা থেকে আসা সব বিদেশি অতিথি।
ব্যতিক্রম অবশ্য আছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজের বিশেষ গাড়ি ‘বিস্ট’ চড়েই সে দিন অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন। আলাদা গাড়ির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, ইজ়রায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজ়গ এবং জাপানের রাজা নারুহিতোর জন্যও। বলা হয়েছে, মূলত নিরাপত্তার কারণে এই চার জনের ক্ষেত্রে বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা কর হচ্ছে। বাকিদের সকলের জন্যই থাকছে বাসের ব্যবস্থা।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের আমন্ত্রিতের তালিকায় রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনিও কি তা হলে বাসে চেপে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাবেন? তা স্পষ্ট হয়নি এখনও। তবে সূত্রের খবর, শেষকৃত্যে যোগ দিতে মোদীর লন্ডনে আসার সম্ভাবনা কম। তিনি সেই সময়ে এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে উজ়বেকিস্তানে থাকবেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সেখানে বৈঠক রয়েছে তাঁর। সেই বৈঠককেই আপাতত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত। তবে ২৭ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবের শেষকৃত্যে যোগ দিতে টোকিয়ো যাওয়ার কথা মোদীর। বরং তাঁর জায়গায় রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে লন্ডনে আসতে পারেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এ নিয়ে কোনও চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও করেনি।
তবে ব্রিটিশ সরকারের অন্দরেই এই বাসের ব্যবস্থা নিয়ে ফিসফাস শুরু হয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির প্রধানদের কী ভাবে বলা সম্ভব যে তাঁরা বাসে চড়ে অনুষ্ঠানে আসুন! বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। তাদের বক্তব্য, প্রতিটি রাষ্ট্রনেতা ও তাঁদের সঙ্গী বা স্ত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করলে গোটা লন্ডন শহরের পরিস্থিতি ভয়ানক জটিল হয়ে উঠবে। যা সামলানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
ব্রিটিশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যাদের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, সেই সব দেশের রাষ্ট্রনেতা বা তাঁদের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তালিকায় রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার চেয়ারম্যান কিম জং উন-ও। পুতিন না এলেও, তাঁর প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে আসবেন বলেই আপাতত জানা গিয়েছে। আমন্ত্রিতের তালিকায় থাকছেন বেলজিয়াম, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্পেনের রাজা-রানিরা। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানে থাকার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া, নিউজ়িল্যান্ড, কানাডার রাষ্ট্রপ্রধানেরা।
তবে হিথরোয় কোনও ব্যক্তিগত বিমানের জায়গা থাকবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব বিদেশি নেতা বা তাঁদের প্রতিনিধিদের তাই যাত্রিবাহী বিমানে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে স্কটল্যান্ড থেকে লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে এসে পৌঁছয় রানির কফিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy