Advertisement
E-Paper

আমেরিকার গ্রিনল্যান্ড দখলেও নাক গলাবে না রাশিয়া: পুতিন, বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ নিয়ে কেন নিরুত্তাপ? নেপথ্যে অন্য ভাবনা?

উত্তর মেরুতে রাশিয়ার বৃহত্তম শহর মারম্যান্‌স্কে গিয়েছিলেন পুতিন। সেখান থেকেই জানান, গ্রিনল্যান্ড আমেরিকা এবং ডেনমার্কের নিজস্ব ব্যাপার। এতে রাশিয়ার কিছু করার নেই।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ০৮:১১
Share
Save

আমেরিকা যদি গ্রিনল্যান্ড দখল করেও নেয়, রাশিয়ার তাতে কিছু বলার নেই। এটি আমেরিকা এবং ডেনমার্কের নিজস্ব বিষয়। উত্তর মেরুতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলতে শুরু করেছেন, রুশ ভূখণ্ডের বাইরে উত্তর মেরুর উপর আধিপত্য বিস্তারের আর কোনও পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। পুতিন সরাসরি না-বললেও এই অঞ্চলটি আপাতত তারা আমেরিকার হাতেই ছেড়ে দিতে চাইছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের সম্পর্কের সমীকরণই রাশিয়ার এই নীতির কারণ বলে মত ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সেই কারণে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপের প্রতি রাশিয়ার এই ‘উদাসীনতা’। তবে অনেকে আবার বলছেন, পুতিনের এই মন্তব্যের নেপথ্যে অন্য ভাবনা রয়েছে।

সম্প্রতি উত্তর মেরুতে রাশিয়ার বৃহত্তম শহর মারম্যান্‌স্কে গিয়েছিলেন পুতিন। সেখান থেকে অবশ্য তিনি এই অঞ্চলে রাশিয়ার নেতৃত্ব জোরদার করার কথাই বলেছেন। পুতিন বলেন, ‘‘সারা বিশ্বের নিরিখে আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’ কিন্তু একইসঙ্গে গ্রিনল্যান্ড প্রসঙ্গে নিরুত্তাপ ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। উত্তর মেরুতে অন্য কোনও ভূখণ্ডের উপরেও দাবি জানাননি তিনি। মেনে নিয়েছেন, ‘‘উত্তর মেরু অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’’ এর পরেই ট্রাম্পের উদাহরণ টানেন তিনি। জানান, উত্তর মেরুতে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির অন্যতম উদাহরণ গ্রিনল্যান্ডে ট্রাম্পের আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা।

পুতিন বলেন, ‘‘গ্রিনল্যান্ড নিয়ে আমেরিকার পরিকল্পনা যথেষ্ট গুরুতর। এই পরিকল্পনার নেপথ্যে গভীর ইতিহাস রয়েছে। ওরা যে উত্তর মেরু অঞ্চলে নিজেদের রাজনৈতিক, ভূরাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করবে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু গ্রিনল্যান্ডের সমস্যা দু’টি পৃথক দেশের মধ্যেকার বিষয়। এটা আমেরিকা আর ডেনমার্কের ব্যাপার। আমাদের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।’’

পুতিনের এই মন্তব্যকে অনেকে গ্রিনল্যান্ড প্রসঙ্গে আমেরিকার আগ্রাসনে সবুজ সঙ্কেত হিসাবেই দেখছেন। যে সময়ে তিনি এই ধরনের মন্তব্য করলেন, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকায় ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিকে ওয়াশিংটনে ডেকেও সেই কথা জানান। সমঝোতায় রাজি না-হলে জ়েলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদও হয়েছিল। ইউক্রেন প্রসঙ্গে কিছু দিন আগে পুতিনকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে প্রায় দু’ঘণ্টা কথা হয়েছে। যদিও এখনও পাকাপাকি ভাবে যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কোনও পক্ষ। অনেকের মতে, গ্রিনল্যান্ডে নাক না-গলানোর বার্তা দিয়ে পুতিন আসলে ইউক্রেনের বিষয়ে আমেরিকার নাক গলানোর রাস্তাও বন্ধ করতে চাইলেন। ইউক্রেনের যে ভূখণ্ড রাশিয়া দখল করেছে, তা ছেড়ে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই যে তাঁর নেই, তা পুতিন আগেও একাধিক বার বুঝিয়ে দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় এই বিষয়টি তিনি কাজে লাগাতে পারেন।

উল্লেখ্য, কানাডার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড ‘স্বশাসিত’ হলেও তার উপর ইউরোপীয় দেশ ডেনমার্কের অধিকার আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। এই গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেই বার্তা দিয়ে আসছেন। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেদে বার বার ট্রাম্পের এই আগ্রাসনের সমালোচনা করছেন। কিন্তু ট্রাম্প অনড়।

Greenland Greenland Trump Vladimir Putin Russia US Donald Trump

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}