Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চিনকে নিয়ে শঙ্কা, হাই অ্যালার্ট জারি ভিয়েতনাম সেনাবাহিনীতে

যে কোনও সময় সংঘর্ষ হতে পারে চিনের সঙ্গে। ভিয়েতনামের সেনা ও নৌবাহিনীতে তাই হাই অ্যালার্ট। দেশের উত্তর সীমান্ত এবং দক্ষিণ চিন সাগরে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সব সময় তৈরি থাকার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট সরকার।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ১১:৫২
Share: Save:

যে কোনও সময় সংঘর্ষ হতে পারে চিনের সঙ্গে। ভিয়েতনামের সেনা ও নৌবাহিনীতে তাই হাই অ্যালার্ট। দেশের উত্তর সীমান্ত এবং দক্ষিণ চিন সাগরে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সব সময় তৈরি থাকার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট সরকার। খবর সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে। রাশিয়া থেকে আনা হচ্ছে ৬টি কিলো ক্লাস সাবমেরিনও।

১৯৭৯ সাল ভোলেনি ভিয়েতনাম। কমিউনিস্ট দেশ হয়েও আক্রান্ত হতে হয়েছিল কমিউনিস্ট প্রতিবেশীর হাতেই। দেশের উত্তর সীমান্তকে রক্ষা করতে চিনের সঙ্গে সে সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে হয়েছিল ভিয়েতনামের সেনাবাহিনীকে। যুদ্ধ থেমেছিল। কিন্তু উত্তেজনা শেষ হয়নি। চিন-ভিয়েতনাম সীমান্ত এখনও একই রকম উত্তপ্ত। তাই উত্তর সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে ভিয়েতনাম সেনাবাহিনীর যে অংশ, সেই ডিভিশন ৩০৮-কে গত সাড়ে তিন দশক ধরে প্রবল শক্তিশালী করে তুলেছে হ্যানয়। লাওস এবং কম্বোডিয়ার সঙ্গেও ভিয়েতনামের সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু সেই সব সীমান্তে পাহারায় থাকা ব্যাটেলিয়নগুলির শক্তিবৃদ্ধিতে ভিয়েতনামের সরকার ততটা গুরুত্ব দেয়নি, যতটা দেওয়া হয়েছে চিন সীমান্তে মোতায়েন থাকা ডিভিশন ৩০৮-এর ক্ষেত্রে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দীর্ঘ দিন ধরেই অত্যাধুনিক যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভিয়েতনামের বাহিনীকে। ভারত ভিয়েতনামকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও সরবরাহ করতে শুরু করেছে। রাশিয়ার সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে ভিয়েতনামের। এই সব চুক্তির সবচেয়ে বেশি সুফল পেয়েছে ডিভিশন ৩০৮। ভিয়েতনাম সেনাবাহিনীর কর্তারাই জানিয়েছেন সে কথা। কৌশলগত ভাবেই ডিভিশন ৩০৮-কে শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে বলে সে দেশের সেনাবাহিনী সূত্রের খবর। উত্তর সীমান্তে চিনা আগ্রাসন আবার থাবা বসানোর চেষ্টা করলে, সব রকম ভাবে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য ডিভিশন ৩০৮ প্রস্তুত বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু সেনা কর্তা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, ডিভিশন ৩০৮-এর মূল মন্ত্রই হল যে কোনও মুহূর্তে লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকা।

আরও পড়ুন:

চিনের টাওয়ার ভাঙল ভারত, লাদাখে ফের মুখোমুখি ভারত-চিন

ভিয়েতনামের সরকার অবশ্য শুধুমাত্র উত্তর সীমান্ত নিয়ে চিন্তিত নয়। দক্ষিণ চিন সাগরও সঙ্ঘাতের অন্যতম সম্ভাব্য ক্ষেত্র, মনে করছে হ্যানয়। তাই বেশ কয়েক বছর আগেই দেশের দক্ষিণ প্রান্তের একটি বন্দর ভারতীয় নৌবাহিনীকে ছেড়ে দিয়েছে ভিয়েতনাম। সেখানে তৈরি হয়েছে ভারতীয় নৌঘাঁটি। ফলে দক্ষিণ চিন সাগরে বল্গাহীন আগ্রাসন দেখানোর আগে দু’বার ভাবতে হচ্ছে চিনা নৌসেনাকে। নিজেদের নৌবহরে সাবমেরিন বাড়ানোর উপরও জোর দিয়েছে ভিয়েতনাম। রাশিয়ার কাছ ৬টি কিলো ক্লাস সাবমেরিন কিনছে তারা। যার প্রথমটি ভিয়েতনামের নৌবাহিনীর হাতে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। কৌশলগত ভাবে প্রথমেই সেই সাবমেরিনটিকে দক্ষিণ চিন সাগরে টহলদারিতে নামিয়ে দিয়েছে হ্যানয়।

নিউক্লিয়ার সাবমেরিনকে বাদ দিলে, বিশ্বের বিভিন্ন নৌবাহিনীর হাতে সবচেয়ে শক্তিশালী যে সব সাবমেরিন রয়েছে, সেগুলির অন্যতম হল এই কিলো ক্লাস সাবমেরিন। চিনা নৌবাহিনীর সাবমেরিন বহরও কিলো ক্লাস সাবমেরিনের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের জলসীমা রক্ষা করার জন্য আপাতত নতুন ৬টি কিলো ক্লাস সাবমেরিনই যথেষ্ট বলে মনে করছে ভিয়েতনাম। তার সঙ্গে রয়েছে দেশের দক্ষিণ প্রান্তে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারতের বিশাল নৌবহরের ভরসাও। ফলে স্থলসীমা ও জলসীমায় চিনের মোকাবিলা করার জন্য ভিয়েতনাম সব রকম ভাবেই প্রস্তুত। দাবি সে দেশের সেনাবাহিনীর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE