বুধবার ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের হামলাকারীদের দলে ছিলেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প-পন্থী সেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক ভিনসেন্ট জেভিয়ার পালাথিঙ্গমের হাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে আমেরিকার নেটাগরিকদের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে আত্মপক্ষ সমর্থনে ‘মুখ খুলেছেন’ ভিনসেন্ট।
আমেরিকার নাগরিক ওই মালয়ালি ব্যক্তির দাবি, ক্যাপিটলের সামনে জড়ো হওয়া ট্রাম্প সমর্থকদের মধ্যে ১০ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের সাকিন কেরল। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘সেই দেশপ্রেমিক আমেরিকানদের মধ্যে ভিয়েতনাম, ভারত, কোরিয়া, ইরান এবং অন্য দেশের বংশোদ্ভূতরাও ছিলেন। তাঁরা সকলেই বিশ্বাস করেন, ভোটে জালিয়াতি হয়েছে, তাই ট্রাম্পের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়েছিলেন তাঁরা’।
যদিও বুধবারের ঘটনাপ্রবাহ বলছে, টাম্প সমর্থকদের প্রতিবাদ আদৌ শান্তিপূর্ণ ছিল না। ঐতিহাসিক ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি হামলা হয়েছে পুলিশের উপরেও। সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে ৪ জনের। আমেরিকায় ২৩২ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
@ShashiTharoor @varungandhi80
— Vincent Xavier (@VincentPXavier) January 8, 2021
American patriots - Vietnamese, Indian, Korean & Iranian origins, & from so many other nations & races, who believe massive voter fraud has happened joined rally yesterday in solidarity with Trump. Peaceful protestors who were exercising our rights! pic.twitter.com/aeTojoVxQh
ভিনসেন্ট তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে ক্যাপিটল-কাণ্ডের বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান এবং একদা আমেরিকার মদতপুষ্ট তথা অধুনালুপ্ত রাষ্ট্র দক্ষিণ ভিয়েতনামের পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীদের ছবি রয়েছে। তাঁর দাবি, সে দিন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন আমেরিকানও ট্রাম্পের সমর্থনে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, ৫৪ বছরের ভিনসেন্ট আদতে কেরলের কোচির বাসিন্দা। প্রায় ২৫ বছর আগে তিনি আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন। পেশায় উদ্যোগপতি ওই ব্যক্তি রিপাবলিকান পার্টির সদস্য এবং ট্রাম্পের পরিচিত। আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্টকে রফতানি বিষয়ক পরামর্শদাতা কমিটির সদস্যও করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ক্যাপিটলে হামলাকারীদের জমায়েতে ভারতের জাতীয় পতাকা
বুধবার ক্যাপিটল বিক্ষোভে ‘কনফেডারেট’ পতাকার উপস্থিতি নিয়েও ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ১৮৬১ সালে ক্রীতদাস প্রথার সমর্থক ১১টি স্টেট আমেরিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ‘কনফেডারেট স্টেটস’ গঠন করেছিল। দীর্ঘ ৪ বছর গৃহযুদ্ধের পরে ‘কনফেডারেট স্টেটস’কে পরাজিত করে আমেরিকাকে ফের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন। ঘটনাচক্রে, দাসপ্রথা এবং বর্ণবৈষম্যের বিরোধী লিঙ্কনের দল রিপাবলিকান পার্টিরই নেতা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যদিও ভিনসেন্টের দাবি, বিক্ষোভকারীরা আদৌ বর্ণবিদ্বেষী নন। প্রেসিডেন্ট ভোটে জালিয়াতির প্রতিবাদ জানাতেই তাঁরা ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের সামনে জমায়েত করেছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট ভোটে বাইডেনের জয় অনুমোদন কংগ্রেসের, মানলেন ট্রাম্পও