এত দিন ধরে ভারত যে অভিযোগ তুলে গিয়েছে, এ বার তাতে সিলমোহর দিল পাকিস্তান। খোদ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ কার্যত স্বীকার করে নিলেন যে, গত তিন দশক ধরে জঙ্গিদের সমর্থন এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসলামাবাদ। তবে এই ‘নোংরা কাজের’ দায় আমেরিকা এবং পশ্চিমি বিশ্বের উপর চাপিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ়’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজা বলেন, “আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ পশ্চিমি বিশ্বের জন্য আমরা গত তিন দশক ধরে এই নোংরা কাজ করে যাচ্ছি।” এই ‘ভুল’ কাজের জন্য পাকিস্তানকে ভুগতে হচ্ছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর দ্বিমেরুকৃত বিশ্বে আমেরিকা এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ শুরু হয়। মার্কিন অক্ষের সদস্য পাকিস্তান ঠান্ডা যুদ্ধে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এমনকি ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর মার্কিন সেনা যখন আফগানিস্তান কার্যত দখল করে, তখনও আমেরিকার পাশে দাঁড়ায় পাকিস্তান। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পাকিস্তানের মন্ত্রী দাবি করেন, আফগানিস্তানে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিল আমেরিকা।
আরও পড়ুন:
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভারতকেও দুষেছেন। তাঁর দাবি, পাকিস্তান এবং গোটা অঞ্চলে ভারত সমস্যা তৈরি করতে চাইছে। মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলার নেপথ্যে লশকর-এ-ত্যায়বার হাত রয়েছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “লশকর পুরনো একটা নাম। এটা এখন আর নেই। আমাদের সরকার এটার (পহেলগাঁও কাণ্ড) নিন্দা জানায়। পাকিস্তান কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার।”
পহেলগাঁওয়ে ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে লশকরের ‘ছায়া সংগঠন’ ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। পাকিস্তানের মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, তিনি কোনও দিন টিআরএফ-এর নাম শোনেননি। ভারত ‘সামরিক প্রত্যাঘাত’ করলে তার ফল দুই দেশের জন্যই ভয়াবহ হবে বলে সাবধান করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “দু’টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত বাধলে তা সব সময়েই ভয়ের কারণ।”