হিউস্টনের মঞ্চে নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প— ফাইল চিত্র।
পাশাপাশি হাতে হাত ধরে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দু’জনে। বক্তৃতায় ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন পরস্পরকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৈত্রীর এই ‘নির্দশন’ এ বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভোটের প্রচারে। প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচন চেয়ে ট্রাম্পের ‘আরও চার বছর’ (ফোর ইয়ার মোর) প্রচারের সূচনা হয়েছে শনিবার। সেখানেই ‘ভিডিয়ো ক্যাম্পেনিং’-এ তুলে ধরা হয়েছে ট্রাম্প-মোদী যৌথ জনসভার কিছু ক্লিপিংস।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয় ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার উদ্দেশে ট্রাম্পের এই প্রচার কর্মসূচিতে দুই রাষ্ট্রনেতার সাম্প্রতিক কালের দু’টি সভার ফুটেজ ঠাঁই পেয়েছে। রয়েছে দু’জনের বক্তৃতাও। প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাম্প ভিকট্রি ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান কিম্বারলি গিলফয়েল রবিবার বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বরাবরই খুব ভাল সম্পর্ক। ভারতীয়-মার্কিনদের মধ্যে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে ভিডিয়োটি।’’
প্রথমটি, গত সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ সভা। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়ের সামনে কূটনীতির বেড়া টপকে ‘অব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান দিয়েছিলেন মোদী। বলেছিলেন, ‘‘ট্রাম্পের নেতৃত্বগুণ, আমেরিকাকে নিয়ে ওঁর আবেগ, দেশের নাগরিকদের জন্য ওঁর উদ্বেগ এবং আমেরিকাকে ফের মহান করে তোলার জন্য ওঁর মনের তাগিদ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।’’
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল সংবাদমাধ্যমের একাংশ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রতিনিধি কেন আমেরিকা সফরে গিয়ে রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট বিভাজনের ‘শরিক’ হলেন, তা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছিল।
ট্রাম্পের প্রচার ভিডিয়োর পরবর্তী ‘গন্তব্য’ মোদীর রাজ্য গুজরাতের আমদাবাদ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দু’দিনের ভারত সফরে এসে সেখানে পুনর্নির্মিত মোতেরা ক্রিকেট স্টেডিয়াম (সর্দার পটেল স্টেডিয়াম) উদ্বোধনে গিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতে মোদী দাবি করেছিলেন, তিনি এবং ট্রাম্প মিলে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবেন।
প্রচার ভিডিয়োতে মোদীর সেই বক্তৃতার অংশও ঠাঁই পেয়েছে। সেখানে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে দর্শকদের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আপনি একদিন আমার সঙ্গে আপনার পরিবারের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। আমি আজ আমার পরিবারের সঙ্গে আপনার পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।’’ জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘আমেরিকা ভারতকে ভালবাসে। সম্মান করে। আমেরিকা বরাবরই বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে ভারতের পাশে থাকবে।’’
আরও পড়ুন: ভারতে বিনামূল্যে করোনা টিকা মিলতে আর ৭৩ দিন, জানাল প্রস্তুতকারী সংস্থা
আমেরিকার ভোটের অতীত পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন-ভারতীয়ের বড় অংশই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক। এ বারের ভোটে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন তাঁর ‘রানিং মেট’ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে। ফলে সেই সমর্থন আরও একচেটিয়া হওয়ার আশঙ্কা। কিন্তু প্রবাসী ভারতীয় সমাজে মোদীর জনপ্রিয়তা এখনও প্রবল। তাই ভোটের অঙ্ক কষেই মোদীর ‘দ্বারস্থ’ হয়েছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: ‘নিষ্ঠুর আর মিথ্যাবাদী’, ট্রাম্প সম্পর্কে ভাইঝির মন্তব্য ফাঁস
মার্কিন-ভারতীয় ভোটে থাবা বসাতে আরও একটি কৌশল নিয়েছেন ট্রাম্প। সোমবার রিপাবলিকান পার্টির তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মাইক পেন্সের মনোনয়ন ঘোষিত হবে। সেই সভার অন্যতম বক্তা সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাক্তন গভর্নর, ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকি হ্যালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy