Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মার্কিন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠার জয়ের পিছনে বাঙালি তরুণ সৈকত

টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থ শহরের আদি বাসিন্দা সৈকত স্নাতক হয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে ওয়াল স্ট্রিটে কিছু দিন কাটানোর পরে চলে যান ক্যালিফর্নিয়া। সেখানে ‘মকিংবার্ড’ নামে ওয়েব ডিজ়াইন সংক্রান্ত একটি ‘টুল’ তৈরিতে হাত লাগান আর এক জনের সঙ্গে। টানা আট বছর ছিলেন সিলিকন ভ্যালিতে।

আলেকজ়ান্দ্রিয়ার চিফ অব স্টাফ সৈকত চক্রবর্তী।

আলেকজ়ান্দ্রিয়ার চিফ অব স্টাফ সৈকত চক্রবর্তী।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৬
Share: Save:

মার্কিন কংগ্রেসের সদ্য নির্বাচিত সব চেয়ে তরুণ সদস্যা আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্তেজ়ের উত্থানের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে এক বাঙালি তরুণের নামও। তিনি সৈকত চক্রবর্তী, আলেকজ়ান্দ্রিয়ার চিফ অব স্টাফ। টুইটারের অ্যাকাউন্টেও তাঁর এটাই পরিচয়।

টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থ শহরের আদি বাসিন্দা সৈকত স্নাতক হয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে ওয়াল স্ট্রিটে কিছু দিন কাটানোর পরে চলে যান ক্যালিফর্নিয়া। সেখানে ‘মকিংবার্ড’ নামে ওয়েব ডিজ়াইন সংক্রান্ত একটি ‘টুল’ তৈরিতে হাত লাগান আর এক জনের সঙ্গে। টানা আট বছর ছিলেন সিলিকন ভ্যালিতে। ২০১৫ সালে প্রযুক্তির দুনিয়া ছেড়ে সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের জন্য কাজ করতে নামেন। তবে একটি মার্কিন পত্রিকার দাবি অনুযায়ী, সৈকত স্নাতক স্তরে পড়াশোনার পরেই চেয়েছিলেন নিজের সংস্থা খুলতে। কিন্তু কাজের দুনিয়ায় পা রাখার পরে তাঁর মোহভঙ্গ হয়। আলেকজ়ান্দ্রিয়ার চিফ অব স্টাফ পত্রিকাটিকে বলেছেন, ‘‘আপনি যে সমাজটা গড়তে চান, সেটার জন্য সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। আর সেটা রাজনীতির মাধ্যমেই সম্ভব।’’

স্যান্ডার্সের প্রচার-দলে যোগ দেওয়ার পরেও সৈকত নিশ্চিত ছিলেন না যে তিনি ঠিক সমাধান খুঁজে পেয়েছেন কি না! তবে সেই দলেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় আলেকজ়ান্দ্রা রোজাস এবং করবিন ট্রেন্টের। বার্নির প্রচারের কাজের পরেও রাজনৈতিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে এই তিন জন তৈরি করেন একটি অ্যাকশন কমিটি, ‘জাস্টিস ডেমোক্র্যাটস’। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ‘ব্র্যান্ড নিউ কংগ্রেস’, এটিরও সহ-প্রতিষ্ঠাতা সৈকত। এ বার এই দুই সংস্থার কাজ ছিল, মোট ৪০০ প্রার্থী নিয়োগ করা। সাধারণ জনতার উদ্দেশে সংস্থা দু’টি বলেছিল, নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যেই কাউকে মনোনীত করুন।

আরও পড়ুন: ডিজ়নিওয়র্ল্ড দেখার আগেই মৃত্যু

বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক মতাদর্শ এখানে বিচার্য নয়। প্রার্থীরা যেন সবার জন্য স্বাস্থ্যবিমা, সবার জন্য বেতন নিয়ে ভাবেন এবং রাজনীতিতে অর্থ যে সব কিছু নয়, সেটাও মাথায় রেখে চলেন। ১২ হাজার আবেদন জমা পড়ে সৈকতদের কাছে। তার মধ্যে থেকে ১২ জন প্রাইমারি পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান। আর এক জন জিতে আসেন মার্কিন কংগ্রেসের আসনে— ওকাসিয়ো কর্তেজ়। তবে সৈকতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কেবল জেতার ভাবনা তাড়া করত বলে এক সময়ে মনে হয়েছিল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি হয়তো আলেকজ়ান্দ্রিয়াকে বেছেই নেবে না!

আরও পড়ুন: সিআইএ-র ৩ শীর্ষ পদে মহিলারা

প্রার্থী তৈরি আর বাছাই-পর্ব সেরে সৈকত এখন স্বপ্ন দেখেন, ‘নয়া সবুজ চুক্তির।’ যেটির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে রাশ টানা যাবে আর মার্কিন অর্থনীতিকেও পাল্টে ফেলা যাবে। বদল আসবে বিচার সংস্কারের ক্ষেত্রেও। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী দিনে মার্কিন জনতাকে বোঝাতে হবে একটাই কথা— ২০২০ সালে হাউস, সেনেট আর প্রেসিডেন্টের পদে যদি ডেমোক্র্যাটরাই জিতে আসেন, তা হলে কী কী ঘটতে পারে।’’ মার্কিন পত্রিকার কাছে সৈকতের মন্তব্য, ‘‘এখন সব চেয়ে বেশি সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। তার পরে শুরু হবে তাকে ঘিরে আন্দোলন।’’

আর একটা নির্বাচনের জন্য হাত পাকাচ্ছেন বাঙালি তরুণ!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE