স্কট মরিসন। ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের বিভিন্ন দফতরে যৌন হেনস্থার ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ঠিক এক বছর আগে প্রথম ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন পার্লামেন্টেরই এক কর্মী, ব্রিটনি হিগিনস। তাঁর দেখাদেখি পার্লামেন্টের আরও কয়েক জন মহিলা কর্মী যৌন হেনস্থা ও কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অনবরত বিব্রত করার অভিযোগ আনেন। যা নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয় দেশ জুড়ে। চাপে পড়ে মরিসনকে একাধিক তদন্তের নির্দেশও দিতে হয়।
পার্লামেন্টে দাঁড়িয়েই আজ ব্রিটনির কাছে স্কট সকলের হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া বাকি মহিলাদের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী মিস হিগিনসের কাছে। এখানে তাঁর যা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে তা ভাবা যায় না। সেই সঙ্গে আমি ক্ষমাপ্রার্থী তাঁদের কাছেও, যাঁরা মিস হিগিনসেরও আগে এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন।’’
পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে মরিসন কার্যত মেনে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে পার্লামেন্টের মহিলা কর্মীদের উপরে এই ধরনের যৌন অত্যাচার হয়ে এসেছে। এবং সবচেয়ে বড় কথা, মহিলা কর্মীদের আনা অভিযোগ আগে সে ভাবে গুরুত্ব দিয়ে শোনাই হত না। ২০১৯ সালে এক মন্ত্রীর দফতরে ব্রিটনিকে ধর্ষণ করেছিল তাঁরই এক সহকর্মী। ব্রিটনির অভিযোগ, তাঁকে পুলিশের কাছে যেতে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়েছিল। প্রায় এক বছর পরে নিজের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ব্রিটনি। তাঁর দেখাদেখি পার্লামেন্টের আরও অনেক মহিলা কর্মী নিজেদের হেনস্থার অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।
মহিলাদের উপরে হওয়া যৌন নির্যাতন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সরকার যে ক’টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম জেনকিন্স রিভিউয়ের সাড়ে চারশো পাতার রিপোর্ট জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত মহিলাদের এক-তৃতীয়াংশ কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত যৌন হেনস্থার শিকার হন। আজ নিজের বক্তৃতায় কার্যত সেই সব অভিযোগকে সিলমোহর দিয়েছেন মরিসন। বলেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন। এর পরিবর্তন হচ্ছে এবং আমার বিশ্বাস এর পরিবর্তন হবেই।’’
মরিসনের সঙ্গে ব্রিটনির কাছে আজ ক্ষমা চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা লেবার পার্টির অ্যান্টনি অ্যালবানিজ়ও। ব্রিটনির উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘নীরবতার সংস্কৃতিকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন আপনি।’’
গোটা বক্তৃতা আজ পার্লামেন্টের পাবলিক গ্যালারিতে বসে শুনেছেন ব্রিটনি। তাঁর পাশে ছিলেন হেনস্থার শিকার হওয়া পার্লামেন্টের আরও তিন প্রাক্তন মহিলা কর্মচারীও। আগামিকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বক্তব্য রাখবেন ব্রিটনি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া আর এক মহিলা গ্রেস টেম-ও। গ্রেসের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এখন ক্ষমা চাওয়ার নাটক করছেন মরিসন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy