জন বার্লা। —ফাইল চিত্র।
‘‘দিদি, আশীর্বাদ করলে অবশ্যই তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’’ বক্তব্য যাঁর, তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ। জন বার্লা। তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সভায় যোগ দেওয়ার এক দিন আগে, বুধবার বার্লার এই মন্তব্যে উত্তরবঙ্গের চা-বলয়ে শুরু হয়েছে আলোড়ন। রয়েছে জল্পনা। বার্লাকে কি দলে নেবে তৃণমূল? কারণ, ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের পরে বার্লাই, সেই ব্যক্তি যিনি রাজ্য ভাগের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। পক্ষান্তরে, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত ভাবে রাজ্য ভাগের বিরোধী।
আলিপুরদুয়ারের কালচিনির সুভাষিণী চা বাগানে আজ, বৃহস্পতিবার সরকারি সুবিধা বিলির সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সে সভাতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বার্লাকে। স্ত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে দিল্লিতে গিয়েছিলেন বার্লা। সভায় যোগ দিতে এ দিন বিমানে উত্তরবঙ্গে ফেরেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরে বলেন, “সরকারের তরফে বিশেষ নিমন্ত্রণ মিলেছে। সুভাষিণী চা বাগানের সরকারি অনুষ্ঠানে যাচ্ছি।” জোড়েন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডেকেছেন। তাই যাচ্ছি। যদি ওঁর আর্শীবাদ মেলে, অবশ্যই তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’’
২০১৯ সালে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে জেতা বার্লাকে গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তার পর থেকে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে বার্লার দূরত্ব বেড়েছে। ২০২৪ সালে লোকসভায় জয়ী বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার জয়ের ব্যবধান কমেছে। দলের জেলা সভাপতি মনোজের সঙ্গে বার্লার ‘সুসম্পর্ক’ সুবিদিত। মনোজের ছেড়ে যাওয়া মাদারিহাট বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের আগে, বার্লা প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের একাংশের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিজেপির জেলা নেতাদের একাংশ। তার পাশাপাশি বিজেপির একটা বড় অংশই মনে করে, চা-বলয়ে বার্লার এখন আর তেমন কোনও প্রভাব নেই। কিন্তু তৃণমূল শিবিরের যুক্তি, বিজেপির এক প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিজেদের টেনে আনতে পারলে তার রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। সেই বার্তাই শাসক দলের লক্ষ্য।
বিজেপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এ দিন বার্লার অভিযোগ, ‘‘তরাই-ডুয়ার্সে চা-শ্রমিকদের দশা ভাল নয়। চা বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় বিজেপিকে আনার জন্য আমি সব করেছি। ২০১৯-এ জিতে দিল্লি থেকে অনেক কাজ করতে চেয়েছিলাম। দলেরই রাজ্য, জেলার নেতারা সে সব রুখে দিয়েছেন। আদিবাসী সমাজের সঙ্গে বড় ধোঁকা হয়েছে।’’ বিজেপি সাংসদ মনোজ পাল্টা বলেন, ‘‘জন বার্লা হিরো নন! তার পরেও বিজেপি ওঁকে সাংসদ, মন্ত্রী করেছে। এর থেকে বেশি আর কি সম্মান পেতে চান? বিজেপিতে ব্যক্তিবিশেষের মূল্য নেই।’’ মনোজের সংযোজন: ‘‘উনি দল পরিবর্তন করলে, সেটা ওঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’
রাজ্য ভাগের পক্ষে সওয়াল করা বার্লাকে নিলে তা কি তৃণমূলের ভাবমূর্তির পক্ষে ভাল হবে? রাজ্যসভার সদস্য তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আর বার্লার দাবি, ‘‘মনোজ টিগ্গার জয়ের ব্যবধান ৭৫ হাজারে ঠেকেছে। সম্প্রতি উপনির্বাচনে আমি কাজ করিনি। তাই বিজেপি হেরে গিয়েছে। এটা থেকেই প্রমাণিত, মানুষ কার পাশে আছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy