প্রার্থনা সেরে গির্জার বাইরের রাস্তায় সবে মাত্র পা রেখেছিল বছর পনেরোর কিশোর। সঙ্গে ছিল ছোট ভাই। হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছিল দু’জনে। এমন সময়ই উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে গেল দাদা।
নিয়মমাফিক টহল দিতে বেরিয়ে বুধবার দুপুরে এমনই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে বার্মিংহামের এরডিনটন থানার এক পুলিশ অফিসার। হঠাত্ দুর্ঘটনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয় বছর পনেরোর কিশোরটি। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা আইসিইউতে চিকিত্সাধীন থাকার পর শুক্রবার প্রাণ হারায় সে। ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। দুর্ঘটনার জন্য তিনি নিজেও অনুতপ্ত।
মৃত কিশোরের নাম হ্যারি কিরখাম। বার্মিংহামের কিংস্ট্যান্ডিং এলাকায় বাবা, মা, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকত সে। এরডিনটনের একটি গির্জায় প্রতি সন্ধেয় প্রার্থনা করতে যেত। বুধবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রার্থনা সেরে ভাইকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল হ্যারি। অন্ধকার রাস্তায় পুলিশের গাড়ির নীল আলো চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। কিছু ঠাহর করে ওঠার আগেই সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটি। প্রাথমিক চিকিত্সার পর কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিত্সকেরা জানান, ঘটনার আকস্মিকতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে সে। মৃত্যু শয্যাতেও পুলিশের সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে হ্যারি। পুলিশের দাবি, এনডিনটন থানা সংলগ্ন ব্যস্ত রাস্তাটিতে পারাপারের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও হ্যারি তা মানেনি। আর তাই এই বিপত্তি।
চনমনে, হাসিখুশি কিশোরটির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কিংস্ট্যান্ডিংয়ে। প্রতি সন্ধেয় যে গির্জায় প্রার্থনা করতে যেত সে, শোকস্তব্ধ সেখানকার সকলে। হ্যারির পরিবারকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে স্থানীয় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন হ্যারির বাবা-মা।
হ্যারিকে মনে রেখে দুর্ঘটনাস্থলে এ দিন ফুল, কেক, কার্ড রেখে যান অনেকে। হ্যারির বন্ধুরা ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছে এরডিনটন থানার বেশ কিছু পুলিশ এবং সংলগ্ন গির্জার অনেকে। ফুলের স্তূপ থেকে উঁকি দিচ্ছে তেমনই একটি কার্ড। লেখা রয়েছে, “শান্তিতে থেকো হ্যারি। অন্য কারও মধ্যে বেঁচে থাকবে তোমার হৃদয়, তোমার আত্মা। ভুলব না তোমায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy