Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan War

Afghanistan: ‘ওরা মেয়েদের মানুষ ভাবে না’

তালিবানের দাবি, মেয়েদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাঁদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে না। বরং তালিবান শাসনে নাকি আরও অধিকার পাবেন মহিলারা।

কাবুলে সোমবারও স্কুলের পথে মেয়েরা। এই কি শেষ?

কাবুলে সোমবারও স্কুলের পথে মেয়েরা। এই কি শেষ? ছবি: টুইটার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাবুল শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৭:০৩
Share: Save:

রাজধানীর বুকে ঝাঁ-চকচকে বিউটি পার্লার। ছিল, দু’দিন আগেও ছিল। এখন দরজায় তালা। সেলুনের বাইরের দেওয়ালে বিয়ের সাজে কিছু মেয়ের ছবি ছিল। একে একে মুছে যাচ্ছে সে সব। তালিবানের নির্দেশে সাদা রং করে দেওয়া হচ্ছে ছবির উপরে। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই ছবির কমেন্টে হা-হুতাশ। এক নেটিজ়েন লিখছেন, ‘‘এর মধ্যেই মেয়েদের অস্তিত্ব মুছতে শুরু করেছে!’’

তালিবানের দাবি, মেয়েদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাঁদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে না। বরং তালিবান শাসনে নাকি আরও অধিকার পাবেন মহিলারা। কিন্তু বাস্তবে ইঙ্গিত উল্টো। কাবুল তালিবানের দখলে চলে আসার পর থেকে শহরের রাস্তায় মেয়েদের ছবি নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। অঘোষিত ফতোয়া— রাস্তাঘাটে যেন কোনও নারী-মুখ দেখা না যায়। সে জীবন্ত হোক (সে ক্ষেত্রে বোরখা কিংবা হিজাব পড়তেই হবে) বা প্রাণহীন কাগজের ছবি!

বিশ বছর আগে তালিবান জমানায় এ সবই দেখেছেন আফগান মেয়েরা। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া মহিলাদের বেরনো নিষিদ্ধ। রাস্তায় বোরখা আবশ্যিক। পায়ের পাতাটকু দেখা গেলেও কঠিন শাস্তি। মেয়েদের পড়াশোনা-চাকরি নিষিদ্ধ। ২০ বছরে বদলেছিল পরিস্থিতি। কর্মস্থানে দেখা মিলছিল মেয়েদের। শোনা যাচ্ছে, যে সব মহিলা চাকরি করতেন, কর্মস্থল থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর অফিসে আসতে হবে না। তাঁদের জায়গায় কাজ করবেন কোনও পুরুষ কর্মী। নিয়ম না মানার শাস্তি কী, তা জানেন আফগানরা। প্রকাশ্যে রাস্তায় পাথর ছুড়ে হত্যা, নয়তো হাত-পা কেটে দেওয়া কিংবা স্রেফ ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া। টুইটারে এক জন লিখেছেন, ‘আতঙ্কের সবে শুরু। আফগানিস্তানের মেয়েদের জন্য ভয় করছে।’’ এ কথা যে কত সত্যি, তা টের পাওয়া যাচ্ছে গত মাস থেকেই। এলাকা ধরে মেয়েদের নামের তালিকা চেয়েছে তালিবান। ১৫ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সকলের। এমনকি বিধবাও। তালিবান যোদ্ধাদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের। আসলে ‘যৌনদাসী’।

রাজধানীর রাস্তাঘাটে বিজয়োৎসব। তালিবান মুখপাত্র মহম্মদ নঈম বলেছেন, ‘‘এ বার যুদ্ধ শেষ! ২০ বছরের আত্মত্যাগ ও চেষ্টার ফল।’’ একের পর এক হুড-খোলা জিপ, গাড়িতে রাস্তায় চক্কর দিয়ে তারই উদ্‌যাপন করছে রাইফেলধারী যোদ্ধারা।

দিল্লিবাসী ৩৩ বছর বয়সি আফগান তরুণী খাতেরার কথায়, ‘‘তালিবান মেয়েদের মানুষ ভাবে না। মেয়েরা শুধু একদলা মাংস আর চামড়া।’’ আফগান পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতেন খাতেরা। তালিবান যে ফিরছে, তা হয়তো আগেই টের পেয়েছিলেন। গত বছর গজনিতে তাঁর উপর হামলা চালায় তালিবান জঙ্গিরা। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় শরীর। তার পরে ছুরি দিয়ে ফালা-ফালা করে দেয় দেহ। উপড়ে নেয় চোখ। কী ভাবে যেন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য দিল্লিতে চলে আসেন। এখন এখানেই। বলেন, ‘‘ওরা প্রথমে অত্যাচার করবে। তার পরে আধমরা শরীরটা রাস্তায় ফেলে দিয়ে লোকজনকে দেখাবে— দেখো, নিয়ম না-মানলে কী করব। নয়তো কুকুরদের খাইয়ে দেবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan War Afghanistan taliban women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy