প্রতীকী ছবি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলির যে সব কর্মী ব্রিটেনের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কাজ করেন, তাঁদের জন্য সম্প্রতি সারচার্জ দ্বিগুণ করা হয়েছে ব্রিটেনে। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন এখানকার ভারতীয় চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, ব্রিটেনের সরকারের এই দাবি একেবারেই অন্যায্য।
অভিবাসীদের জন্য ‘ইমিগ্রেশন হেল্থ সারচার্জ’ ২০১৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে নেওয়া শুরু হয়েছিল। বছরে যার পরিমাণ ছিল দু’শো পাউন্ড। গত বছর ডিসেম্বর থেকে তা বাড়িয়ে এক লাফে চারশো পাউন্ড করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের দাবি, ব্রিটেনে সরকারি অর্থে চলা ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’ (এনএইচএস)-এ অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহের জন্যই এই ব্যবস্থা।
এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ফের ভাবনাচিন্তা করতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসকদের সব চেয়ে বড় সংগঠন ‘ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ান্স অব ইন্ডিয়ান অরিজিন’ (বিএপিআইও) স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে দরবার করেছে। বিএপিআইও-র যুক্তি, এনএইচএস-এ এমনিতেই কর্মীর অভাব। এ বার এই দ্বিগুণ সারচার্জে ভারত থেকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী নিয়োগে বিরূপ প্রভাব পড়বে। গত সপ্তাহে বিএপিআইও প্রেসিডেন্ট রমেশ মেহতা ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদকে একটি চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘বর্তমান নীতিতে এনএইচএস-এর কাজে উৎসাহ হারাবেন অনেকে। এতে রোগীদের উচ্চমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে আমাদেরই অসুবিধেয় পড়তে হবে। তাই রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং দক্ষ অভিবাসী কর্মীদের উৎসাহ বাড়াতে এনএইচএস-এর কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য অন্যায্য এবং পক্ষপাতদুষ্ট সারচার্জ অবিলম্বে তুলে নিতে অনুরোধ করছি।’’ বিএপিআইও জানিয়েছে, এনএইচএস-এ এই মুহূর্তে চিকিৎসক, নার্স মিলিয়ে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ কর্মী-ঘাটতি পৌঁছবে অন্তত ২ লক্ষ ৫০ হাজারে। চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্য কর্মী মিলিয়ে ভারত থেকে প্রচুর লোক ব্রিটেনে আসেন বলে দাবি। তাঁদের ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবার ‘শিরদাঁড়া’ বললে অত্যুক্তি হয় না বলে জানাচ্ছে বিএপিআইও। এনএইচএস-এ কর্মী-ঘাটতি ঠেকাতে এবং ভারতের কর্মীদের উৎসাহ দিতে নানা ফেলোশিপ প্রকল্পও আছে বিএপিআইও-র। সে উদ্যোগও ভেস্তে যাবে। ‘‘এই কর্মীরা শুল্ক দিচ্ছেন, সঙ্গে ভাল মানের স্বাস্থ্য পরিষেবাও। আর তাঁদেরই ঘাড়ে এ ভাবে সারচার্জের দ্বিগুণ বোঝা চাপালে তাঁদের হতাশা বাড়বে,’’ বলছেন এক অধ্যাপক।
এই সারচার্জ অভিবাসী (যাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকবেন) আবেদনের ফর্মের সঙ্গেই জমা দিতে হয়। তার পর প্রতি বছর আলাদা করে দিতে হয় এই অর্থ। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘পার্লামেন্ট এই সারচার্জে সায় দিয়েছে। এনএইচএস-এ অর্থের কী অবস্থা, এই সিদ্ধান্ত থেকেই তা স্পষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy