—প্রতীকী ছবি।
মুম্বইয়ে ২৬/১১ সন্ত্রাসের অন্যতম চক্রী লস্কর-ই-তৈবা নেতা সাজিদ মিরকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনেছিল ভারত এবং আমেরিকা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভেটো দেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্থায়ী সদস্য চিন। বুধবার এই নিয়ে চিনের নাম না করেই বেজিংয়ের ভূমিকার সমালোচনা করল নয়াদিল্লি। ভারতের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে সন্ত্রাসদমনের আন্তর্জাতিক কাঠামোয় গলদ থাকা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে সন্ত্রাসবাদ দমনের ‘রাজনৈতিক ইচ্ছা’ নিয়েও।
খানিক আত্মসমালোচনা কিংবা স্বগতোক্তির সুরে কথাগুলি বলা হলেও মনে করা হচ্ছে, চিনকে নিশানা করেই এই বিবৃতি প্রকাশ করেছে ভারত। ওই বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “আমাদের এটা মনে করার ন্যায়সঙ্গত কারণ আছে যে, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক কাঠামোয় নিশ্চয়ই কোনও গলদ রয়েছে।” এর পাশাপাশি, ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা যদি ক্ষুদ্র ভূরাজনৈতিক স্বার্থে রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রস্তাবিত সন্ত্রাসবাদীদের ‘জঙ্গি’ হিসাবে স্বীকৃতি না দিই, তবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের ‘রাজনৈতিক ইচ্ছা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।” উল্লেখ্য যে, ভারতের তরফে যখন এই বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে, তার কিছু সময় পরেই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে যোগ দিবসের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১২৬৭ অল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’তে পাক জঙ্গি সাজিদকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিতে বাধা দেয় চিন। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অন্যতম প্রধান ‘চক্রী’ ছিল সাজিদ। ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ হিসাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে সাজিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেত। সেই সঙ্গে বাইরে যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি হত। কিন্তু শি জিনপিং সরকারের বাধায় তা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছরও ‘১২৬৭ অল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’র বৈঠকে সাজিদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল চিন। এক সময় লস্কর জঙ্গি সাজিদের মাথার দাম ৫০ লক্ষ ডলার (প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকা) ধার্য করেছিল আমেরিকা। ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএএফটি)-এর ধূসর তালিকা থেকে নিজেদের সরাতে মরিয়া পাকিস্তান ২০২২ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্যের মামলায় সাজিদকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। তবে, মুম্বই হামলায় সাজিদের যোগসাজশের অভিযোগে এখনও পদক্ষেপ করেনি ইসলামাবাদ।
শুধু মুম্বই হামলা নয়, আমেরিকা, আস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ডেনমার্ক এবং ব্রিটেনে একাধিক হামলার পিছনেও সাজিদ জড়িত বলে আমেরিকার গোয়েন্দাদের অভিযোগ। আমেরিকায় বিভিন্ন সময় হামলার সঙ্গে জড়িত সাজিদকে ২০১১ সালের ২১ এপ্রিল আমেরিকার ইলিনয়ের এক আদালতে অভিযুক্ত করা হয়। সেই মামলায় বলা হয়েছিল, ২৬/১১-র ঘটনাতেও বিদেশিদের আটকে রাখার নির্দেশ এসেছিল সাজিদের কাছ থেকে। বন্দিদের হত্যার নির্দেশও সে দিয়েছিল। দীর্ঘ দিন থেকে সাজিদ এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy