নিহত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। রয়টার্স
বছর দু’য়েক আগে শারীরিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তত ক্ষণে অবশ্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘতম সময় পার করে ফেলেছেন শিনজ়ো আবে। সাত বছর আট মাসের সেই মেয়াদ কালে বিশ্ব রাজনীতিতে জাপানকে এক অন্য পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন আবে। এমনটাই দাবি কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আততায়ীর গুলিতে মৃত্যুর পরে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলি যেমন এক দিকে আবের কূটনৈতিক সাফল্যের দিকগুলি আজ তুলে ধরেছে, তেমনই ঘরোয়া রাজনীতিতে আবের গুরুত্ব কতটা ছিল, তা নিয়েও আজ চর্চা চলেছে দিনভর।
আদ্যন্ত রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা আবের জাপানের রাজনীতিতে আসা ছিল সময়ের অপেক্ষা। তাঁর দাদু নবুসুকে কিশি এক সময়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পদ সামলেছেন। বাবা শিনতারো আবে ছিলেন বিদেশমন্ত্রী। আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে আশির দশকের গোড়ায় জাপানের রাজনীতিতে পা রাখেন আবে। প্রথমবারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হন ২০০৬ সালে। দলের খারাপ ফল আর অসুস্থতার কারণে এক বছরের মাথাতেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থকে ইস্তফা দিয়ে দেন তিনি, কিন্তু পাঁচ বছরের মাথায়, ২০১২ সালে ফের জাপানের প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসেন তিনি।
তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আবেকে। পরের কয়েকটা বছরে তরতরিয়ে এগিয়েছে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার। এক দিকে, যেমন দেশে তাঁর দারিদ্র দূরীকরণ নীতি প্রশংসা কুড়িয়েছে। সেই সঙ্গেই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের বাড়তে থাকা প্রভাব প্রশমনে দেশের সংবিধানে বদল আনার স্পর্ধাও দেখিয়েছিলেন আবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যে জাপান দেশের অস্ত্রভান্ডার বাড়ানোর দিকে এত দিন নজর দেয়নি, আবের নেতৃত্বে সেই জাপান সরকারই প্রতিরক্ষা খাতে খরচ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতা করলেও জাপানের মানুষ পরে বুঝেছিলেন চিনের আগ্রাসন আটকাতে বিচক্ষণ আবে কেন এই পথ বেছেছিলেন।
পাশাপাশি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের একক আধিপত্য খর্ব করতে চতুর্দেশীয় কোয়াড গঠনের মূল হোতা ছিলেন আবে-ই। ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াকে সঙ্গে নিয়ে এই কোয়াড গঠন আবের অন্যতম সেরা কূটনৈতিক সাফল্য বলে মনে করা হয়। শুধু তা-ই নয়, এশিয়ার রাজনীতিতে ভারতের গুরুত্ব বুঝতেও একটুও ভুল করেননি তিনি। ভারতের সঙ্গে তাঁর সরকারের সম্পর্ক তাই সব সময়েই ছিল উষ্ণ ও মধুর। তবে চিনকে রুখতে কোয়াড গঠন করলেও আবের আমলেই বেজিংয়ের সঙ্গে টোকিয়োর কূটনৈতিক সম্পর্ক অন্য মাত্রায় পৌঁছেছিল। বেজিংয়ে অ্যাপেক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে গিয়ে আবে দেখা করেছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন আবে। তবে উত্তর কোরিয়া নিয়ে বরাবরই তাঁর বিদেশ নীতি ছিল কঠোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy