স্কট মরিসন।
‘কোড রেড ফর হিউম্যানিটি’— রিপোর্টটির নামেই মানবজাতির জন্য বিপদবার্তা স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও সেটিকে খুব একটা আমল দিতে নারাজ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন! তাঁর দাবি, ‘‘অস্ট্রেলিয়া নিজের দায়িত্ব ঠিক মতোই পালন করছে।’’ এ দিকে দাবানল, বন্যা, ধস থেকে শুরু করে ভয়াবহ খরা— গত কয়েক বছরে সবই দেখেছে অস্ট্রেলিয়া। কার্বন নিঃসরণের নিরিখে বরাবর শীর্ষে থাকা দেশগুলির অন্যতম তারা। যদিও বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন ফেলে দেওয়া এই রিপোর্টের ভিত্তিতে তারা অন্তত কোনও পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে না বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত মরিসনের। সঙ্গে এ প্রসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পরিকল্পনাহীন লক্ষ্যের জন্য অস্ট্রেলিয়ানদের হয়ে কোনও ব্ল্যাঙ্ক চেক-এ আমি অন্তত সই করব না।’’
গতকাল রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রকাশিত ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২১: দ্য ফিজ়িকাল সায়েন্স বেসিস’-এর অন্তর্গত ‘কোড রেড ফর হিউম্যানিটি’ নামে ওই রিপোর্টে জলবায়ুর ভোলবদল ও পৃথিবীর বাসিন্দাদের উপর তার ভয়াবহ প্রভাব নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘দ্য অথরিটেটিভ ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) এই বিপদঘণ্টা বাজানোর পরে সতর্ক পদক্ষেপের দিকে ঝুঁকেছে বেশির ভাগ দেশই। এই আসন্ন সঙ্কট এড়াতে কড়া আইনি পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিচ্ছে আমেরিকাও। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। ‘মিত্র দেশ’ অস্ট্রেলিয়ার কাছেও সেই আর্জি রেখেছেন তিনি। তবে জীবাশ্ম জ্বালানির অন্যতম প্রধান উৎপাদনকারী এই দেশের প্রশাসন আমল দিচ্ছে না তাতেও।
২০৫০-এর মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা নিয়ে ‘কথা দিতে’ নারাজ মরিসন সরকার। এমনকি রিপোর্টটি নিয়ে সে দেশের সেনেটর ম্যাথিউ ক্যানাভানের মন্তব্য, ‘‘সব সময়েই বলা হয় আকাশ ভেঙে পড়ছে। কিন্তু আসলে তা কখনওই হয় না।’’
তবে মরিসন প্রশাসন যতই ‘নাগরিকদের হয়ে’ কথা বলার দাবি করুক না কেন, সাধারণ মানুষ যে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে সহমত নয় তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মঙ্গলবারই। এ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব থেকে দেশকে না-বাঁচাতে পারার অভিযোগে সরকার পক্ষকে বিঁধে একাধিক গ্রাফিটি আঁকা হয়েছে পার্লামেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দেওয়ালে।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার প্রসঙ্গে আইপিসিসি-র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগামী দিনে দাবানলের ঘটনা আরও বাড়বে সে দেশে। সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে খরার এবং সাইক্লোনের সংখ্যাও। তবে আমেরিকা, চিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেমন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনায় বদ্ধপরিকর, জনসংখ্যা অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া তেমন কোনও অবস্থান নিচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর একটা বড় কারণ, কয়লা বা লোহা উৎপাদনের উপরেই অনেকটা নির্ভরশীল সে দেশের অর্থনীতি।
এ দিকে, জলদূষণ রোধ করতে নর্দমার ঘোলা জলকে পানের যোগ্য করে তুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সিঙ্গাপুর! এই দ্বীপদেশে পানীয় জলের জোগান খুব বেশি নেই। এ ক্ষেত্রে পড়শি দেশগুলির উপরে তারা অনেকটাই নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতি থেকে খানিকটা মুক্তি পেতে দূষিত জল পরিশ্রুত করতে এক বিশেষ প্রযুক্তি তৈরি করেছে সরকার। এতে প্রায় ৪০% দেশবাসীর কাছে সহজেই পরিশ্রুত জল পৌঁছে দেওয়া যাবে, মত প্রশাসনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy