Advertisement
E-Paper

Russia-Ukraine Conflict: ফুটবল মাঠে রুশ গোলা, ১৬ বছরের ছেলের রক্তাক্ত লাশ জড়িয়ে অঝোরে কান্না বাবার

ইলিয়ার মাথার কাছে রাখা চেয়ারটা টেনে নিয়ে ছেলের মাথায় একটা স্নেহের চুম্বন করলেন। প্রাণবন্ত ছেলেটা কয়েক ঘণ্টা আগেও ফুটবল নিয়ে খেলছিল। এখন একেবারেই সব চুপ। ওটি-র নিস্তব্ধতারও যেন শেরিকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনও ভাষা ছিল না।

ছেলের রক্তমাখা দেহ জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা। ছবি সৌজন্য টুইটার।

ছেলের রক্তমাখা দেহ জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা। ছবি সৌজন্য টুইটার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ১৩:২৭
Share
Save

রক্তমাখা একখানা চাদর। হাসপাতালের বারান্দায় সেই চাদরেই ঢাকা স্ট্রেচারের উপর বছর ষোলোর এক কিশোরের দেহ। আর তার ঠিক মাথার সামনে বসে অঝোরে কেঁদে চলছেন এক ব্যক্তি। ছবিটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের।

রুশবাহিনীর বোমাবর্ষণে জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে কিশোরের। ঘটনাস্থল অ্যাজভ সাগরলাগোয়া বন্দরশহর মারিউপল। মাথার উপর দিয়ে গর্জন করে উড়ে যাচ্ছিল রুশ বায়ুসেনার বিমান। চারপাশে তখন গোলাগুলির আওয়াজ, আর মাঝেমধ্যেই কানফাটনো বিস্ফোরণ, সঙ্গে বিশাল আগুনের গোলা আকাশে উঠে মিশে যাচ্ছিল।

বুধবার। মাঠে তখন বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় ব্যস্ত ইলিয়া। যে কানফাটানো বিস্ফোরণের আওয়াজ আশপাশে শুনছিল তারা, এ বার তেমনই একটা গোলা এসে পড়ল মাঠে। অভিঘাত এতটাই ছিল যে সকলে ছিটকে পড়েছিল এ ধার ও ধার। ধোঁয়া আর ধুলোয় চারপাশ ভরে গিয়েছিল। একটু পরিষ্কার হতেই দেখা গেল রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাঠ। কেউ অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে। ইলিয়ার সারা শরীর তখন রক্তে ভিজে গিয়েছিল। খরবটা পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন ইলিয়ার বাবা শেরি।

আহত কিশোরদের একের পর এক গাড়িতে তুলে নিয়ে সোজা হাসপাতালে ছুটেছিলেন স্থানীয়রা। ইলিয়াকে সোজা অস্ত্রোপচারের ঘরে (ওটি) নিয়ে যাওয়া হয়। বাইরে তখন তাঁর বাবা অধীর অপেক্ষায়, আশঙ্কার প্রহর গুনছিলেন। বেশ কিছু ক্ষণ পর শল্যচিকিৎসকরা এক এক করে ওটি ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। কারও মুখে কথা নেই। ইলিয়ার বাবার চোখে চোখ না রেখেই তাঁরা এক এক করে বেরোলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন চিকিৎসক শুধু শেরির হাতটা ধরলেন। অন্য চিকিৎসককে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখা গেল। ওটি-র দরজার সামনে তখন ঠায় দাঁড়িয়ে শেরি। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছিল। একটা তীব্র যন্ত্রণায় যেন গলা বুজে আসছিল।

চিকিৎসকরা কোনও কথা না বলেই ওটি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শেরির আর বুঝতে দেরি হয়নি কী ঘটে গিয়েছে। রক্তমাখা চাদরে ঢাকা ছিল ইলিয়া। আপাদমস্তক। না, কোনও হেলদোল নেই শরীরের। অসাড় হয়ে স্ট্রেচারের উপর পড়ে। চিৎকার করে কাঁদার চেষ্টা করেও যেন কাঁদতে পারেননি শেরি। ইলিয়ার মাথার কাছে রাখা চেয়ারটা টেনে নিয়ে ছেলের মাথায় একটা স্নেহের চুম্বন করলেন। প্রাণবন্ত ছেলেটা কয়েক ঘণ্টা আগেও ফুটবল নিয়ে খেলছিল। এখন একেবারেই সব চুপ। ওটি-র নিস্তব্ধতারও যেন শেরিকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনও ভাষা ছিল না। ছেলের মাথায় মুখ ঠেকিয়ে নিঃশব্দেই কেঁদে চলেছেন সন্তানহারা এক বাবা। আর এই দৃশ্যই যেন গোটা বিশ্বের হৃদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে।

Russia-Ukraine Crisis son father Death

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}