বেলজিয়ামে গ্রেফতার করা হল পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের আর্থিক তছরুপ মামলায় অভিযুক্ত মেহুল চোকসীকে। সূত্রের খবর, ভারতের অনুরোধেই বেলজিয়াম সরকার এই পদক্ষেপ করেছে। ইকোনমিক টাইম্স জানিয়েছে, ৬৫ বছরের পলাতক এই ব্যবসায়ী আপাতত রয়েছেন বেলজিয়ামের জেলে। তাঁর গ্রেফতারির জন্য বেলজিয়ামের কাছে আবেদন জানিয়েছিল ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই অনুযায়ী শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ।
মুম্বইয়ের আদালতে চোকসীর বিরুদ্ধে দু’টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২৩ মে-র পর আবার ২০২১ সালের ১৫ জুন চোকসীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। সেই পরোয়ানাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে চোকসীকে। তবে শীঘ্রই তিনি জামিনের আবেদন জানাবেন। শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য কারণ দেখিয়ে বেলজিয়ামে জামিন চাইবেন চোকসী।
আরও পড়ুন:
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে চোকসীর বিরুদ্ধে। কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারেনি। সিবিআই এবং ইডি, উভয় সংস্থাই তাঁকে খুঁজছে। দীর্ঘ দিন ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগা ও বারবুডায় ছিলেন চোকসী। সেখানকার নাগরিকত্বও রয়েছে তাঁর। চোকসীর আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০২৩ সালে অ্যান্টিগা ও বারবুডার বিচারবিভাগ জানিয়েছিল, তাঁকে ওই দেশ থেকে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। ফলে সেখানে থাকাকালীন তাঁকে ভারতে ফেরানো এবং বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। অ্যান্টিগা ও বারবুডা থেকে পরে বেলজিয়ামে চলে যান চোকসী। সেখান থেকে তাঁকে ফেরানো সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। সেই চেষ্টাই শুরু করেছে ভারতের সংস্থাগুলি। গত মাসেই জানা গিয়েছিল, চোকসীকে ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে নয়াদিল্লি। বেলজিয়াম সরকারের সঙ্গে সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে পিএনবি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পর ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান চোকসী। থাকতে শুরু করেন অ্যান্টিগা ও বারবুডায়। সেখানকার নাগরিকত্বও জোগাড় করে ফেলেন। ২০২১ সালে সেখান থেকে রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অনেকে মনে করেছিলেন, ভারত সরকার তাঁকে অপহরণ করেছে। কিন্তু পরে তাঁকে ডমিনিকায় পাওয়া যায়। এর পর বেলজিয়ান স্ত্রীর সাহায্যে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ‘এফ রেসিডেন্সি কার্ড’ জোগাড় করে বেলজিয়ামে থাকতে শুরু করেন চোকসী। এই কার্ডের মাধ্যমে অন্য কোনও দেশের নাগরিক বৈবাহিক সঙ্গীর সঙ্গে কিছু শর্তসাপেক্ষে বেলজিয়ামে থাকতে পারেন। তবে চোকসী এখনও অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিক। তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদীও পিএনবি-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। তাঁকে ভারতে ফেরানোর জন্য ব্রিটেন সরকারের সঙ্গে আইনি কথাবার্তা চলছে।