সেনামহড়ায় ভারতীয় জওয়ানেরা। ছবি: পিটিআই।
পুলওয়ামা কাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় যে কোনও মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে সেনা অভিযান চালাতে পারে ভারত, এই আতঙ্কেই এখন দিশেহারা পাকিস্তান। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের সতর্ক করল ইসলামাবাদ। রাতের বেলা আলো বন্ধ করে রাখার পাশাপাশি মাটির তলায় বাঙ্কার বানানোর নির্দেশও দিয়েছে পাক প্রশাসন। পাশাপাশি বালুচিস্তানের কোয়েটায় একটি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নেরও নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
উরির আতঙ্ক তাড়া করছে এখন পাক প্রশাসনকে। ২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হামলায় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর কয়েক দিনের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইক ধ্বংস করেছিল জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাড। এবারও পুলওয়ামা কাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে যে কোনও সময় আছড়ে পড়তে পারে ভারতীয় আক্রমণ, এমনটাই আশঙ্কা পাকিস্তানের। তাই আগে ভাগেই নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের আশপাশের গ্রামগুলিকে সতর্ক করতে শুরু করে দিল পাকিস্তান।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, ভিমবের, নীলম, রাওয়ালকোট, কোটলি, ঝিলম, হাওয়েলি এই গ্রামগুলিতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ সতর্কতা । বাসিন্দাদের দল বেঁধে কোথাও না বেরোতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাটিতে গর্ত বানিয়ে বাঙ্কার তৈরি করতেও বলা হচ্ছে বাসিন্দাদের। ভারতীয় অভিযানের সময় এই বাঙ্কারের ভিতর লুকিয়ে পড়তে বলা হচ্ছে তাঁদের। একই সঙ্গে রাতের বেলা খুব প্রয়োজন না পড়লে আলো জ্বালাতেও নিষেধ করা হচ্ছে। পশুপালকদের বাইরে বেরোতে নিষেধ করার পাশাপাশি কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলেই স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের পাশে দাঁড়াল রাষ্ট্রপুঞ্জ, নাম না করে কড়া হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে
পাকিস্তানের বিতর্কিত প্রদেশ বালুচিস্তানের তৎপর হয়ে উঠেছে পাক সেনা। বালুচিস্তানের কোয়েটায় পাক সেনার সদর দফতর থেকে তৈরি হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় জিলানি হাসপাতালকে। যুদ্ধ বাধলে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি যাতে স্থানীয় মানুষদের তড়িঘড়ি চিকিৎসা করা যায়, সেই পরিকাঠামো উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান সেনা।
আরও পড়ুন: সোপোরে এক জঙ্গিকে নিকেশ করল সেনা, ডেরা ঘিরে গুলির লড়াই জারি
সেই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের হাতে,যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘দেশের পূর্ব প্রান্তে হঠাৎ যুদ্ধ বাধলে পঞ্জাব এবং সিন্ধের হাসপাতাল থেকে এখানে নিয়ে আসতে হবে আহত সেনাদের। ওখালকার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরই সেনাদের এখানে নিয়ে আসা হবে।’ এই পরিকল্পনা মাফিক জিলানি হাসপাতালের সুপার আব্দুল মালিককে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান সেনা কর্তৃপক্ষ।
ভারত-পাকিস্তান কূটনীতি নিতে কতটা ওয়াকিবহাল আপনি?
এর পাশাপাশি বালুচিস্তানের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ২৫ শতাংশ বেড সেনাদের জন্য সংরক্ষিত করার কথাও বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে পাক সেনা।
সব মিলিয়ে যে কোনও সময় প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় এখন রীতিমতো যুদ্ধকালীন তৎপরতা গোটা পাকিস্তান জুড়ে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy