ইন্ডিয়া হাউসের সামনে খলিস্তানপন্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত।
কানাডার মাটিতে খলিস্তানপন্থী জঙ্গিনেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনের ঘটনা নিয়ে এ বার উত্তেজনা ছড়ালো ব্রিটেনে। সোমবার লন্ডনের ইন্ডিয়া হাউসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েকশো শিখ বিক্ষোভকারী নিজ্জর হত্যার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পাশাপাশি, স্বাধীন এবং সার্বভৌম খলিস্তানের দাবি তোলেন তাঁরা। এই ঘটনার জেরে ব্রিটেনে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমাজে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার খলিস্তানপন্থীরা ব্রিটেনে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দুরাইস্বামীকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় আলবার্ট ড্রাইভের গুরুদ্বারে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছিল।
লন্ডন পুলিশের তৎপরতার কারণেই বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় হাই কমিশনে হামলা চালাতে পারেনি বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই বিক্ষোভের নেপথ্যে ভারতে নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর সমর্থকেরা জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের খুনের ঘটনায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিতর্কিত বিবৃতির পরে পর ভারত এবং কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে। এই আবহে স্কটল্যান্ডের পর লন্ডনে খলিস্তানপন্থীদের বিক্ষোভের জেরে কূটনৈতিক স্তরে উত্তেজনার পারদ চড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে।
আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এসএফজে। পঞ্জাবের মধ্যে ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম’ রাষ্ট্র গড়ার দাবি তুলেছে তারা। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্র। জানায়, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পান্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইন্টারপোলকে ‘রেড নোটিস’ জারি করার অনুরোধও জানিয়েছে ভারত। যদিও এ বিষয়ে আরও তথ্য চেয়ে সেই আবেদন ফেরত পাঠায় ইন্টারপোল।
ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরে কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পরে মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত। পরবর্তী পদক্ষেপে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যার প্রতিক্রিয়া ট্রুডো সরকার ভারতে অবস্থানকারী কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিশেষ নিরাপত্তামূলক সতর্কতা’ জারি করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy