ওবামা-কন্যাদের এই পোশাক নিয়েই যত বিতর্ক। ছবি: এএফপি।
সহবতটুকুও জানো না দেখছি। এ পোশাক পরলে তো পানশালায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে!
কড়া ভাষায় বকুনি দেওয়া হলো যাদের, তারা দুই কিশোরী। এক জনের বয়স ১৬, আর এক জনের মাত্র ১৩। ঠিক করে বোসো, ঠিক মতো জামাকাপড় পরো, এই ধরনের নানা কথাবার্তা এই বয়সের মেয়েদের প্রায়শই শুনতে হয়। ‘টিনএজ’-এর বাড়তি পাওনা ভেবে, সে সব নিয়ে গায়ে মাখে না কেউ। আর যিনি কড়া কথাটা শোনাচ্ছেন, সেই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষটিও এ নিয়ে দু’বার ভাবেন না।
যদি না, কিশোরী দু’জনের নাম হয় সাশা ও মালিয়া। আরও স্পষ্ট বললে, সাশা ও মালিয়া ওবামা।
স্থান, হোয়াইট হাউস। কাল, থ্যাঙ্কসগিভিং ডে-র এক অনুষ্ঠান। পাত্র, সকন্যা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মার্কিন প্রশাসনের বেশ কিছু কর্তা-ব্যক্তি। আর টেবিলে এক নধরকান্তি টার্কি, থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের প্রতীক। বাগ্মী বলে বরাবরই সুপরিচিত প্রেসিডেন্ট ওবামা বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে রসিকতা জুড়ে দিচ্ছিলেন। পাশে দাঁড়ানো দুই মেয়ে কখনও বা বাবার কথায় হেসেছে, কখনও বা ‘বোরড’ হয়ে এ-দিক ও-দিক তাকিয়ে থেকেছে। ১৩ বছরের সাশার পরনে কালচে মেরুন খাটো ফ্রক, ১৬ বছরের মালিয়া পরেছিল একটা স্কটিশ চেক স্কার্ট।
এখানেই যত গণ্ডগোল। অন্তত সে রকমই মন্তব্য মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান দলের সদস্য স্টিফেন ফিনচারের মুখপাত্র এলিজাবেথ লওটেনের। হোয়াইট হাউস ছবি প্রকাশ করা মাত্র ফেসবুকে সাশা ও মালিয়াকে কটাক্ষ করে লওটেন লিখেছেন, ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’-র ছবিতে বাবার পাশে যে রকম পোশাক পরে তারা দাঁড়িয়ে আছে, তা ভয়ঙ্কর রকমের দৃষ্টিকটু। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মেয়েদের এ রকম ‘স্বল্পবেশে’ আদৌ মানায় না।
এ-টুকু বলেই থেমে থাকেননি লওটন। ফেসবুকে সাশা-মালিয়ার মা-বাবাকে দু’চার কথা শুনিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, “তোমরা যে বাড়িটাতে আছ, সেটার প্রতি সম্মান দেখাও। শিখবেই বা কোথা থেকে? তোমাদের মা-বাবা তো কোনও সম্মানই দেন না, না তাঁদের পদটিকে, না তাঁদের দেশকে।” লওটেনের দাবি, তাদের সামনে কোনও ‘রোল মডেল’ নেই বলেই সাশা-মালিয়া সঠিক আচার-বিচার শিখে উঠতে পারেনি।
ফেসবুকে এই সব মন্তব্য পোস্ট করার পরেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে লওটেনকে। দুই কিশোরীকে কথা শোনানো ও গোঁড়া মনোভাব দেখানোর জন্য লওটেনকে তুলোধনা করতে ছাড়েননি কেউই। এমনকী, কিছু রিপাবলিকানও আবেদন জানাতে শুরু করেন যে, লওটেনকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। শেষমেশ ফেসবুক থেকে মন্তব্যগুলো মুছে দেন লওটেন। বলেন, “বাবা-মার সঙ্গে কথা বলে, নিজের লেখাটা বারবার পড়ে বুঝতে পেরেছি, মন্তব্যগুলো তোমাদের কতটা আঘাত করেছে। আমি যখন কিশোরী ছিলাম, তখন যদি আমাকে কেউ এ কথা বলত, খুব আঘাত পেতাম। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy