বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
চট্টগ্রামের আদালতে সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের মামলাটি এগিয়ে আনার আবেদনের শুনানিই হল না। খারিজ করে দেওয়া হল আবেদন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডি নিউজ় ২৪ জানিয়েছে, চিন্ময়ের মামলা এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছিলেন এক আইনজীবী। ঢাকা থেকে যান চট্টগ্রামে। কিন্তু তাঁর আবেদনের কোনও শুনানিই হয়নি বুধবার। শুনানির আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারী আইনজীবীর অভিযোগ, চট্টগ্রামের কোর্টে বাকি আইনজীবীরা তাঁর আবেদনের বিরোধিতা করেছেন এবং বিচারকের সামনে সম্মিলিত ভাবে চিৎকার করে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছেন। যদিও বাধা দেওয়ার কথা স্বীকার করেননি কোনও আইনজীবী। অভিযোগ, ঢাকা থেকে যে আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণের মামলার শুনানির জন্য গিয়েছিলেন, তাঁর কাছে প্রয়োজনীয় ওকালতনামা ছিল না। সেই কারণে আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খারিজ হয়ে গিয়েছে তাঁর জামিনের আবেদন। ডিসেম্বরের শুরুতে চিন্ময়কৃষ্ণের মামলাটি আদালতে উঠলেও নিজের পক্ষে কোনও আইনজীবীকে পাননি বাংলাদেশ ইসকনের প্রাক্তন সদস্য তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র। তাঁর মামলাটি এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়। আবার জানুয়ারি মাসে এই সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে চট্টগ্রামের আদালত। সেই শুনানি এগিয়ে আনার জন্য নতুন করে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী।
চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন সংক্রান্ত আবেদন নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে গিয়েছিলেন সুুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তিনি বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের চেয়ারম্যান। চট্টগ্রামের আদালতে মোট তিনটি আবেদন জানান তিনি। যে মামলায় চিন্ময়কে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই মামলায় তাঁর পক্ষে আইনজীবী হিসাবে লড়ার জন্য আবেদন করেন। পাশাপাশি, চিন্ময়ের জামিনের মামলাটির শুনানি এগিয়ে আনার আবেদনও করেন। তাঁর কথায়, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে এখানকার কোনও আইনজীবী লড়তে চাইছেন না। আমি আবেদন করেছিলেন। বিচারক তা মঞ্জুর করতে চাইছিলেন। কিন্তু সে সময়ে আদালত কক্ষে শতাধিক আইনজীবী আমার বিরোধিতায় চিৎকার করতে থাকেন। আমার আবেদন না-মঞ্জুর হয়েছে।’’
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি আইনজীবী মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘আবেদনকারী আইনজীবীর কোনও ওকালতনামা নেই। আসামির পক্ষে ওকালতনামা না-থাকায় তাঁর আবেদন গৃহীত হয়নি।’’ ওকালতনামা না-থাকা প্রসঙ্গে আইনজীবী ঘোষ বলেন, ‘‘আমি সিনিয়র আইনজীবী। নিজে স্বাক্ষর করে শুনানির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখানকার পরিস্থিতি দুঃখজনক।’’
উল্লেখ্য, চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করার পর থেকে বাংলাদেশের একাংশে অশান্তি ছড়িয়েছে। চট্টগ্রাম, রংপুরের মতো এলাকায় গ্রেফতারির প্রতিবাদে এবং সন্ন্যাসীর মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছিলেন সংখ্যালঘুরা। বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতও, যার ফলে দুই দেশের সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা এবং ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়েছিল ঢাকা। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকায় গিয়ে বৈঠকও করেছেন মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে। সেই আবহে চিন্ময়ের জামিনের মামলা এগিয়ে আনার আবেদনও খারিজ হয়ে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy