ফাইল চিত্র।
গত রবিবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ঠিক কী হয়েছিল, তা বিশদে জানতে চাইল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি উমর আটা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের বেঞ্চ আজ ২ এপ্রিল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের কার্যকলাপ সম্বন্ধে রিপোর্ট চেয়েছে। প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘‘এখন আমাদের বিবেচ্য বিষয় একটিই— ডেপুটি স্পিকারের বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া নিয়ে পর্যালোচনা করা।’’
রবিবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের অনাস্থা প্রস্তাব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পেশ করা মাত্র তা খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। তাঁর যুক্তি ছিল, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধান-বিরোধী এবং তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই এ নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হতে দিতে পারবেন না তিনি।
এর পরেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সুপারিশে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তখন শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলাবল জ়ারদারি ভুট্টো-সহ বিরোধীরা। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে সুপ্রিম কোর্ট।
সেই মামলার শুনানির সময়ে আজ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এখন আমাদের বিবেচ্য বিষয় একটিই। কেন ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিলেন। আমাদের প্রশ্ন— তাঁর সেই পদক্ষেপ কি সংবিধান-বিরোধী ছিল? আমরা সব পক্ষকে সেই বিষয়টির উপরেই নজর রাখতে বলব।’’ আজ সরকার-বিরোধী জোটের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র সেনেটর রাজ়া রব্বানি এবং আইনজীবী মাখদুম আলি খান। রব্বানির কথায়, ‘‘সে দিন যা হল তা গণতন্ত্রের নামে জরুরি ব্যবস্থা জারি করা ছাড়া আর কিছুই নয়।’’ সংবিধানের ৯৫ নম্বর ধারা দর্শিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভোটাভুটির আগে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল ঘোর অসাংবিধানিক পদক্ষেপ।’’ গত রবিবার অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অ্যাসেম্বলির স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা পর্যায় পর্যন্ত পদক্ষেপ করতে পারে শীর্ষ আদালত, তার থেকে বেশি কিছু করার ক্ষমতা তাদের হাতেও নেই।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যদি ইমরানপন্থীদের পক্ষে সায় দেয়, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ মতো ৯০ দিন পরে সাধারণ নির্বাচন হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি ইমরানের বিরুদ্ধে মত দেয়, তা হলে এ বার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে। তবে একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, তিন মাসের মধ্যে দেশে ফের নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়, এমন মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক।
এ দিকে, যত দিন আবার নির্বাচন না-হয়ে নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, তত দিন তারা পাকিস্তানকে কোনও অর্থসাহায্য করবে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। পাকিস্তানে সংস্থার প্রতিনিধি এস্থার পেরেজ় রুইস আজ এ কথা জানান। আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল বরাদ্দ করেছে। তবে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রকের দাবি, আইএমএফের এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়। বিষয়টি নিয়ে সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
ইমরান বরাবর অভিযোগ করে এসেছেন, বিদেশি শক্তির মদতে বিরোধী দলের নেতারা তাঁর সরকারের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করছেন। মঙ্গলবার তা নিয়েই ইমরানকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিরোধী দলনেতা তথা নওয়াজ় শরিফের ভাই শাহবাজ় শরিফ। তাঁর দাবি, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধীদের গোপন আঁতাঁত রয়েছে কি না, তাঁরা দেশদ্রোহ করেছেন কি না, সুপ্রিম কোর্টের সামনে তার প্রমাণ দিন সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া এবং আইএসআই-এর ডিজি নাদিম আহমেদ অঞ্জুম খান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy