Advertisement
E-Paper

হোয়াইট হাউসে বেনজির তর্ক! ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির প্রকাশ্য বিতণ্ডার পর কোন দিকে যাবে ইউক্রেন সঙ্কট?

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে নীতি পরিবর্তন করাতেই ‘বিপদ’ বৃদ্ধি পায় ইউক্রেনের। ট্রাম্পের ‘সমঝোতা’ প্রস্তাব, তাতে রাজি নন জ়েলেনস্কি। তার পরেই দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বাগ্‌যুদ্ধ, ভেস্তে যায় বৈঠক।

Overall views on Donald Trump and Volodymyr Zelensky argue at the White House

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ২৩:৫৬
Share
Save

হাসি মুখেই হোয়াইট হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আমেরিকা প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প। অপেক্ষায় ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির জন্য। তিনি এলেন, করমর্দন করে একসঙ্গে প্রবেশ করলেন আমেরিকার বিখ্যাত সাদা বাড়িতে! তখন কে জানতেন, ওই হাসি কয়েক মিনিট পরেই উধাও হবে! দুই রাষ্ট্রনেতা জড়িয়ে পড়বেন বেনজির তর্কাতর্কিতে! ওভাল অফিসে ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির প্রকাশ্য বিতণ্ডার পর বিশ্ব রাজনীতিও ভাগাভাগি। তবে সকলের মুখেই শোনা গিয়েছে শান্তির কথা। পাশাপাশি, ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তাও এসেছে। ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির বাগ্‌যুদ্ধ কি আদৌ ভাল হল ইউক্রেনের জন্য? ইউক্রেনপন্থী অনেকেই চিন্তিত সে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে!

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন নীতিতে কিছুটা বদল দেখা যায়। ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সাহায্য কাটছাঁট করে আমেরিকা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আপত্তি উড়িয়ে সৌদি আরবে যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প সরকারের আধিকারিকেরা। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য একপ্রকার জ়েলেনস্কিকেই দায়ী করেন ট্রাম্প। সেই আবহেই প্রকাশ্যে আসে ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কির বৈঠকের কথা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, খনিজ বণ্টন চুক্তি— এই দুইই ছিল ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির বৈঠকের মূল বিষয়।

সম্প্রতি আমেরিকার সঙ্গে খনিজ বণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। চলতি মাসের গোড়ায় মার্কিন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের খনিজে আমেরিকার অগ্রাধিকারের চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন জ়েলেনস্কি। পরে অবশ্য রাজি হয়ে যান চুক্তিপত্র চূড়ান্ত করতে। ট্রাম্প প্রশাসন তো বটেই, অনেকেই ভেবেছিলেন, হোয়াইট হাউসের বৈঠকেই ওই চুক্তিপত্রে সাক্ষর করবেন জ়েলেনস্কি বা সেই পথে এগোবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হল না। ওভাল অফিসে দুই রাষ্ট্রনেতার ৪০ মিনিটের বৈঠক, পাল্টে দিল সব সমীকরণ। খনিজ বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা তো এগোলই না, তার আগেই ভেস্তে গেল বৈঠক। নেপথ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ।

কী থেকে উত্তেজনার সূত্রপাত?

ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কির বাগ্‌‌বিতণ্ডা হয় প্রায় ৪০ মিনিট। তাতে বড় ভূমিকা ছিল ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সেরও। মূলত তাঁর একটি কথার উত্তর দিতে গিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার পর সংবাদমাধ্যমের সামনেই একে অপরকে দোষারোপ করেন ট্রাম্প, ভান্স এবং জ়েলেনস্কি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণ এবং তার পর থেকে চলতে থাকা যুদ্ধপরিস্থিতির জন্য পরোক্ষ ভাবে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেই দায়ী করেন ভান্স। বৈঠকের মাঝেই তিনি বলে ওঠেন, ‘‘চার বছর ধরে আমেরিকার এক জন প্রেসিডেন্ট সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে কড়া কড়া কথা বলে গিয়েছেন। তার পর পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করলেন। দেশের একটা বড় অংশ ধ্বংস করলেন।’’ তার পরেই ভান্স জানান, বাইডেনের পথে হেঁটে কখনই শান্তি কায়েম করা যায় না। উল্লেখ্য, বাইডেন জমানায় ইউক্রেন আমেরিকার থেকে সামরিক সাহায্য পেয়েছিল। বাইডেনের পুতিন বিরোধিতাও ইউক্রেনের পক্ষে গিয়েছিল।

ট্রাম্পের সমঝোতা-শর্ত

ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে নীতি পরিবর্তন করাতেই ‘বিপদ’ বৃদ্ধি পায় ইউক্রেনের। অনেকের মতে, হোয়াইট হাউসের বৈঠকে প্রথম থেকেই জ়েলেনস্কির উপর ‘চাপ’ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। প্রথমেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকে জানান, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছনোর জন্য ইউক্রেনকে ‘সমঝোতা’ করতে হবে। যুদ্ধের অবসান করতে আমেরিকা সব রকম সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দেন ট্রাম্প। কিন্তু ‘সমঝোতা’তে নারাজ জ়েলেনস্কি। বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আপনার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত! আমরা আপনাদের অনেক কিছুই দিয়েছি।’’ জ়েলেনেস্কির জবাব, ‘‘কৃতজ্ঞ? আমাদের মানুষ মারা যাচ্ছেন। শহর জ্বলছে। আর আপনি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বলছেন? আর আপনি আমাদের সমঝোতার কথা বলছেন?’’ জ়েলেনেস্কির দাবি, ‘‘আপনি (ট্রাম্প) আটকে রেখেছেন। সাহায্যে দেরি করছেন। আপনি পুতিনের মিথ্যারই পুনরাবৃত্তি করছেন। রাশিয়াকে সুযোগ করে দিচ্ছেন।’’ পুতিনের নাম করে জ়েলেনেস্কি বলেন, ‘‘খুনির সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়।’’

সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের মাঝে ‘অনড়’ জ়েলেনেস্কিকে নিশানা করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনকে চুক্তি করতেই হবে। তার জন্য কিছু ‘আপস’ও করতে হবে, তবে তা খুব বেশি নয়।’’ তার পরেই যোগ করেন, ‘‘চুক্তিবদ্ধ না-হলে আপনার সঙ্গে থাকবে না আমেরিকা। আপনাকে একাই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’

বৈঠক শেষে ট্রাম্পের বার্তা

ট্রাম্প, ভান্স এবং জ়েলেনস্কির উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের জেরে শেষ পর্যন্ত বৈঠক থেকে কোনও রফাসূত্র বার হয়নি। বাতিল হয়ে যায় যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও। হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে যান জ়েলেনস্কি। গোটা ঘটনা শেষে সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘আজ হোয়াইট হাউসে আমাদের একটি অত্যন্ত অর্থবহ বৈঠক হয়েছে। এমন অনেক কিছু শিখেছি যা এমন অগ্নিগর্ভ ও চাপের পরিস্থিতির মধ্যে আলোচনা ছাড়া সম্ভব হত না। আবেগের মাধ্যমে যা বেরিয়ে এসেছে তা আশ্চর্যজনক।’’

এর পরেই ইউক্রেনকে নিশানা করে ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘আমি বুঝেছি, আমেরিকার কোনও ভূমিকা থাকলে প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি শান্তি প্রক্রিয়ায় শামিল হবেন না। কারণ, তিনি মনে করেন, আমাদের ভূমিকা তাঁকে আলোচনায় একটি বড় সুবিধা দেবে। আমি সুবিধা দিতে চাই না, শান্তি চাই।’’ জ়েলেনস্কি ওভাল অফিসে বসে আমেরিকাকে অসম্মান করেছেন বলে জানিয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘শান্তির জন্য সম্মত হলে তিনি (জ়েলেনস্কি) ফিরে আসতে পারেন।’’

ক্ষমা চাইতে নারাজ জ়েলেনস্কি

হোয়াইট হাউসের কাণ্ডের পর কি দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি সম্ভব? আদৌ মেরামত হবে সম্পর্কের? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরছে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে। যদিও জ়েলেনস্কি আশাবাদী, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করা সম্ভব। তবে তিনি স্পষ্ট জানান, ট্রাম্পের কাছে তিনি ক্ষমা চাইতে নারাজ। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চায়, তিনি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না, নিজের আচরণের জন্য দুঃখপ্রকাশ করবেন কি না? জ়েলেনস্কি সাফ ‘না’ বলে দিয়েছেন। তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘‘এই ধরনের বাদানুবাদ উভয় পক্ষের জন্যই খারাপ। ট্রাম্প যদি ইউক্রেনকে সাহায্য না-করেন, তবে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানো আমাদের পক্ষে মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। তবে আমি নিশ্চিত, এই সম্পর্ক মেরামত করা সম্ভব। কারণ, এটা শুধু দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সম্পর্কের বিষয় নয়। এটি দুই দেশের মধ্যেকার ঐতিহাসিক সম্পর্ক। আমি সব সময় আমাদের দেশের মানুষের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’’

ভেস্তে গেল খনিজ চুক্তি

আমেরিকা এবং ইউক্রেনের মধ্যে বিশেষ খনিজ চুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই কথাবার্তা চলছিল। জ়েলেনস্কিই এই চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে কিছু বিরল খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। সেই খনির দিকে আমেরিকার নজর রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, বিনা বাধায় সেই খনি ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার কথা ছিল আমেরিকার। ট্রাম্প সেই কারণেই এই চুক্তিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমেরিকাকে বিরল খনিজ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তাঁর বদলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বা ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়ে আপস না-করা নিয়ে জ়েলেনস্কি অনড় থাকায় তাই ট্রাম্পের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। সেই কারণেই ভেস্তে গেল খনিজ চুক্তি।

ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি বৈঠকে কী বলছে ইউরোপ?

বৈঠকের পর ইউরোপের একাধিক দেশের রাষ্ট্রনেতারা মুখ খুলেছেন। তাঁরা জ়েলেনস্কি এবং ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। আমেরিকার সঙ্গে ইউরোপের যে সমস্ত দেশের বন্ধুত্ব রয়েছে, মূলত তাঁরাই জ়েলেনস্কিকে সমর্থন করেছেন। ট্রাম্প আমেরিকার কুর্সিতে বসার পর থেকে এই মিত্র দেশগুলি আতঙ্কিত। তাদের ধারণা, জ়েলেনস্কিকে চাপে রেখে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকেই জয়ী ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের। হোয়াইট হাউসে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বেনজির বাদানুবাদের পর একযোগে তাই ইউরোপের রাষ্ট্রনেতারা মুখ খুলেছেন।

বৈঠকে ‘স্যুট’ বিতর্ক

হোয়াইট হাউসে পোশাক নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় জ়েলেনস্কিকে। এক সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কেন আপনি স্যুট পরেননি? আমেরিকার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দফতরে এসেছেন স্যুট না পরে?’’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে খানিক ব্যঙ্গ করেই এর পর তিনি বলেন, ‘‘আপনার আদৌ স্যুট আছে তো?’’ জ়েলেনস্কি তৎক্ষণাৎ জবাব দেন, ‘‘এই যুদ্ধ শেষ হলে আমি নিশ্চয়ই স্যুট পরব। হয়তো আপনার মতো, হয়তো তার চেয়েও ভাল কিছু পরব।’’ উল্লেখ্য, এর আগে জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করার সময়েও স্যুট পরেননি জ়েলেনস্কি।

ব্যঙ্গ মস্কোর

ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি বাদানুবাদ এবং বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার ঘটনায় উল্লসিত মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগীরা হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ওই ঘটনার জন্য দুষেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকেই। পুতিনের নেতৃত্বাধীন রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান তথা সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জ়েলেনস্কিকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘অহংকারী বরাহনন্দন ওভাল অফিসে সপাটে থাপ্পড় খেয়েছে।’’ রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি সমস্ত মিথ্যার মধ্যে জ়েলেনস্কির সবচেয়ে বড় মিথ্যাটি হল, কিভ ২০২২ সালে হোয়াইট হাউসের সমর্থন ছাড়াই লড়েছিল।’’

ট্রাম্পের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ: জ়েলেনস্কি

ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধের পরের দিনই জ়েলেনস্কি জানান, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় থাকারই ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জানিয়েছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া ইউক্রেনের জন্য বিপজ্জনক। শনিবার সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আমরা সব ধরনের সাহায্যের জন্য আমেরিকার কাছে ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ। আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে কৃতজ্ঞ। আমেরিকার সঙ্গে না-হওয়া খনিজ চুক্তি নিয়েও মুখ খুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি লেখেন, “আমরা খনিজ চুক্তি করতে প্রস্তুত। এবং সেটাই হবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা করার প্রথম ধাপ। কিন্তু সেটাই শুধু যথেষ্ট নয়। আমরা আরও একটু বেশি কিছু চাই।” আপাত ভাবে অনেকেই বিষয়টি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সুর নরমের চেষ্টা বলে মনে করছেন।

দুই রাষ্ট্রনেতার বাগ্‌যুদ্ধের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কোন দিকে এগোবে? জ়েলেনস্কি কি ‘বিপদ’ ডেকে আনলেন ইউক্রেনের জন্যে? এমন নানা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকের মতে, ট্রাম্প অর্থাৎ আমেরিকার মতো দেশ যদি ইউক্রেনের বিপক্ষে চলে যায় তাতে চাপে পড়তে পারেন জ়েলেনস্কি! রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে গেলে ইউক্রেনের প্রয়োজন সামরিক সাহায্য। যা তারা এত দিন পেয়ে এসেছে আমেরিকার কাছ থেকে। সেই সাহায্য বন্ধ হলে সমস্যায় পড়তে পারে ইউক্রেন। রুশ সেনার সঙ্গে লড়াই জারি রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। আর সেই কথা ভেবেই কি যুদ্ধবিরতির শর্তে অনড় থেকেও আমেরিকার সমর্থন চাইলেন জ়েলেনস্কি? এখন দেখার ট্রাম্প বা মার্কিন প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়? আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক জোড়া দিতে উদ্যোগী হন কি না জ়েলেনস্কি?

Donald Trump Volodymyr Zelenskyy White House

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}