গত তিন বছর ধরে ‘সন্ত্রাস সংক্রান্ত মতাদর্শ প্রচারের’ অভিযোগে তাদের দশ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন টুইটার কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, যারা হিংসার ছড়ানোর জন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এই সাইটটিকে ব্যবহার করতে চান, তাদের রাস্তা বন্ধ করা ছাড়া আর পথ নেই।
নিজেদের স্বচ্ছতা রিপোর্টে টুইটার দাবি করেছে, ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২ লক্ষ ৭৪ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে সন্ত্রাসে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে। টুইটারের সাম্প্রতিক বিবৃতি অনুযায়ী, গত বারের তুলনায় এই প্রবণতা ৮.৪ শতাংশ কমেছে। টুইটারের প্রচার-নীতি বিভাগের মতে, ‘‘আমাদের কয়েক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ইতিবাচক ফল মিলেছে। যারা সন্ত্রাস ছড়াতে এই সাইট ব্যবহার করতে চাইছিল, তারা আর এ দিকে পা মাড়াতে পারছে না। তাই টুইটারের মাধ্যমে এ ধরনের কার্যকলাপ ছড়ানোর সুযোগ ক্রমশ কমছে।’’ টুইটারের কাছে সারা বিশ্বের বিভিন্ন সরকারের তরফে জেহাদি মতাদর্শ নিয়ন্ত্রণ বা হিংসাত্মক কার্যকলাপ রোধের জন্য ধারাবাহিক ভাবে আবেদন আসছিল।
একই সঙ্গে সে আবেদনে বলা হয়েছিল, স্বাধীন মত ব্যক্ত করার ক্ষমতা যেন কেড়ে নেওয়া না হয়। ২০১৭ সালের ওই পর্বে (জুলাই-ডিসেম্বর) ভারত সরকারের তরফে ৩১৫টি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলা হয়েছিল বলে দাবি টুইটারের। তার আগের ছ’মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি-জুনে সেই সংখ্যাটা ছিল ২৬১। জুলাই-ডিসেম্বরে ১৪৪টি টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে আবেদন জানায় ভারত। জানুয়ারি-জুনে ১০২টি অ্যাকাউন্ট বন্ধের কথা বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে টুইটার।
‘সন্দেহজনক’ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার অনুরোধ সব চেয়ে বেশি এসেছিল আমেরিকার কাছ থেকে। তবে ২০১২ সালের পরে সেই প্রবণতা অনেকটা কমেছে বলে জানিয়েছে টুইটার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাপান।
টুইটারের দাবি, বন্ধ করে দেওয়া অ্যাকাউন্টের ৯৩ শতাংশই তাদের নিজস্ব ব্যবস্থায় আলাদা করে চিহ্নিত করা আছে। আর গন্ডগোল রয়েছে বুঝে ৭৪ শতাংশ অ্যাকাউন্ট থেকে কেউ প্রথম বার টুইট করার আগেই সে অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে।
তবে সন্ত্রাসের পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে টুইটারের রিপোর্টে। তাদের বক্তব্য, ‘‘নতুন নিয়মে ভবিষ্যতে অনলাইনে ব্যক্তিমত প্রকাশে রাশ টানতে গিয়ে বাকস্বাধীনতায় একটা মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ টুইটার সংস্থা একটি মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে বলেছে, বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন সরকার অনলাইন বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকেই তাদের হয়ে কাঁচি চালাতে বাধ্য করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy