ফাইল চিত্র।
মায়ের গর্ভ থেকে ছ’মাসের কন্যা ভ্রূণটিকে বার করে আনলেন চিকিৎসকেরা। ওই ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্রে অস্ত্রোপচার করে ফের তাকে রাখা হল মায়ের গর্ভে। সন্তানটি পৃথিবীর আলো দেখতে চলেছে আগামী এপ্রিলেই। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে এই অস্ত্রোপচারের ঘটনা।
এসেক্সের বিথান সিম্পসনের গর্ভে থাকা ভ্রূণের বয়স যখন ২০ সপ্তাহ, তখন পরীক্ষায় ধরা পড়ে তার মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো হচ্ছে না। বিথানকে পাঠানো হয় এসেক্সের ব্রুমফিল্ড হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, গর্ভস্থ ভ্রূণটি জটিল স্নায়ুরোগের শিকার, যার নাম ‘স্পাইনা বিফিডা’। ভ্রূণের স্নায়ুনালি (নিউরাল টিউব) থেকে ভবিষ্যতে সুষুম্নাকাণ্ড (স্পাইনাল কর্ড) এবং মস্তিষ্ক তৈরি হয়। ‘স্পাইনা বিফিডা’ থাকলে স্নায়ুনালির গঠন ঠিকমতো হয় না। তাই সুষুম্নাকাণ্ড ও মস্তিষ্কের বৃদ্ধিও যথাযথ হয় না। এর ফলে জন্মানোর পর সারা জীবনের জন্য পঙ্গুও হয়ে থাকতে পারে ওই শিশুটি।
ব্রুমফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সিম্পসন দম্পতিকে জানিয়ে দেন, হয় ভ্রূণটিকে নষ্ট করে ফেলতে হবে নয়তো ওই স্নায়ুনালির অস্ত্রোপচার করতে হবে। বিথান গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি লন্ডনে যে সব গর্ভস্থ শিশুর এই রোগ হয়, তাদের শতকরা ৮০ ভাগের কপালেই জোটে মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু যখন জানলাম, ওকে বাঁচিয়ে রাখার উপায় রয়েছে, আমরা অস্ত্রোপচারেই রাজি হয়ে গেলাম।’’
আরও পড়ুন: জল দিয়ো গাছটায়, মিনতি চোরকেই
ভ্রূণের বয়স যখন ২৪ সপ্তাহ, লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে ভর্তি হন বিথান। ব্রিটেন এবং বেলজিয়ামের একদল সার্জন বিথানের গর্ভ থেকে ভ্রূণটিকে বার করে নিয়ে আসেন। তার পরে সেটিকে কৃত্রিম ভাবে বাঁচিয়ে রেখে হয় অস্ত্রোপচার। বিথান বলেন, ‘‘আমরা জানতাম, ওই অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু সন্তানকে স্বাভাবিক জীবন দিতে ঝুঁকিটা নিয়েছিলাম।’’
বর্তমানে গর্ভস্থ ভ্রূণের বয়স ৮ মাস। বিথানের কথায়, ‘‘আমার পেটের ভিতরে ও ক্রমাগত লাথি মেরে চলেছে। একটা ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছে ও।’’ তবে বিথানই প্রথম নন, ব্রুমফিল্ড হাসপাতালের
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এসেক্সের ওই মহিলা ব্রিটেনের চতুর্থ মা, যাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণের এই অস্ত্রোপচার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy