অনিল বন্নাবল্লী
ট্রেনের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন অনিল বন্নাবল্লী। নিউ জার্সির এডিসন স্টেশন থেকে যাবেন নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে। হঠাৎ দেখেন, এক মহিলা পড়ে গিয়েছেন লাইনের উপর। কালবিলম্ব না-করে লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েন অনিল। আরও কয়েক জনের সাহায্যে তুলে আনেন মহিলাকে। কয়েক মিনিট পরেই সেই লাইনে ট্রেন চলে আসে। মুহূর্তের জন্য বেঁচে যায় মহিলার প্রাণ।
নিজের ব্যাকপ্যাকটা প্ল্যাটফর্মে রেখেই ঝাঁপিয়েছিলেন অনিল। সব কিছু মিটে যাওয়ার পর দেখেন, ব্যাগ উধাও। ব্যাগে ল্যাপটপ ও হেডফোন ছিল। দাম ৭০০ ডলার। তা ছাড়া, নগদ ২০০ ডলার এবং অফিসের কার্ড। এ সব খুইয়ে হতবাক অনিল বলেন, ‘‘আমি এক জনের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছি। আর এক জন আমার ব্যাগটা নিয়ে চম্পট দিল? এ রকম পরিস্থিতিতে কেউ কী করে চুরি করতে পারে!’’
হতবাক এডিসন টাউনশিপ পুলিশও। স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে তারা চোর ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রধান টমাস ব্রায়ানের কথায়, ‘‘স্বার্থহীন ভাবে এক জন ভাল কাজ করার চেষ্টা করছেন। আর সেই সুযোগে কেউ সেই ভালমানুষটির জিনিসপত্র চুরি করে পালাচ্ছে। সত্যিই জঘন্য ও নিন্দনীয় এক কাজ।’’
যে মহিলাকে বাঁচাতে ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অনিল, তাঁর নাম মাধুরী রেচেরলা। বয়স ২৬। অনিলেরই সহকর্মী। প্ল্যাটফর্ম থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর হাটু ও গোড়ালিতে চিড় ধরেছে। আপাতত হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশকে তিনি জানান, সকালবেলায় ট্রেন ধরার তাড়ায় কিছু খেয়ে বেরনোর সুযোগ পাননি। খালি পেটে মাথা ঘুরেই এই বিপত্তি। হাসপাতাল থেকেই অনিল এবং অন্য সাহায্যকারীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মাধুরী।
আর অনিল? ল্যাপটপ ও টাকা খুইয়ে নেহাতই বেজার হয়ে পড়েছিলেন এই ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। বলছিলেন, ‘‘দশ বছর এ দেশে রয়েছি। এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম।’’ তারপর এডিসন টাউনশিপ পুলিশের তরফ থেকে সাহসিকতার জন্য অনিলকে এক হাজার ডলারের একটি চেক দেওয়া হয়। হাসি ফোটে অনিলের মুখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy