এই সেই ছবি।
অভিনেতা, অভিনেত্রীদের কি নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে আসা উচিত? উচিত নয়, এই বক্তব্যে সেই সময়টায় মোটের ওপর একমত ছিল আমেরিকা তথা গোটা দুনিয়া। ঠিক সেই সময়ই যে ছবি পাল্টে দিয়েছিল ‘নগ্নতা’র পুরনো ধারণা, এ বার বিরল সেই ছবি সামনে থেকে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন আম-জনতা। একেবারে মূল ছবিগুলোই। নগ্ন সেই মডেলের নাম মেরিলিন মনরো। শনিবার সানফ্রান্সিসকোর সারা স্টকিংস গ্যালারিতে দু’দিন ব্যাপী মূল সেই ছবিরই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
বড়পর্দায় ‘নগ্নতা’ তখনও ব্রাত্য হলিউডে। তখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি মেরিলিন মনরো নামের হলিউড আইকনকে। কিন্তু দারিদ্রের জ্বালায় ক্যামেরার সামনে নগ্ন হয়ে ফোটোশুট করেছিলেন সেই মেরিলিনই। পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। মডেলের নাম হয়েছিল ‘মোনা মনরো’। তারিখটা ছিল ২৭ মে, ১৯৪৯। কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিক। টাকার বিপুল অভাব। বাধ্য হয়েই নগ্ন ফটোশুট করেছিলেন মেরিলিন। জন বাউমগ্রাথ কোম্পানির ফোটোগ্রাফার টম কেলিকে মাত্র দু’ঘন্টা সময় দিয়েছিলেন মনরো। পরবর্তী কালে সেই ছবিই মার্কিন সংস্কৃতিতে বেঞ্চমার্ক হয়ে দাঁড়ায়।
১৯৫২-র মার্চে মুখ খোলেন মেরিলিন। ততদিনে বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন তিনি। সেই সময়ই স্বীকার করলেন, ওই ছবি তাঁরই। যদিও জন বাউমগ্রাথ কোম্পানির কর্তারা মেরিলিনকে ওই ফটোশুট সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলতে বারণ করেছিলেন। তাঁরা মনে করেছিলেন এই খবর প্রকাশ্যে এলে প্রভাব পড়তে পারে মেরিলিনের কেরিয়ারে। কিন্তু ‘নগ্নতা’ নিয়ে মার্কিন সমাজের যাবতীয় ‘ট্যাবু’ ভেঙে দেন নায়িকা। তাঁর সাহসী ফোটোশুটের কথা জানিয়ে দেন সকলকে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়, ‘মেরিলিন স্বীকার করেছেন ওই ক্যালেন্ডারের নগ্ন মহিলা তিনি নিজেই।’
১৯৫৩-র ডিসেম্বরে জন বাউমগ্রাথ কোম্পানির কাছ থেকে ৫০০ ডলারে মেরিলিনের ওই ছবির স্বত্ব কিনে নেন হাগ হেফনার। প্লেবয় ম্যাগাজিনে ‘সুইটহার্ট অফ দ্য মান্থ’ হিসাবে বেরোয় ওই ছবি। তারপর বাকিটা ইতিহাস। ওই মাসে ৫৪ হাজার কপি বিক্রি হয় ম্যাগাজিনের। ছাপিয়ে যায় আগের সব রেকর্ড। ক্যালেন্ডার, ম্যাগাজিন এবং অন্যান্য মাধ্যমে ছাপা হয় ওই ছবি। সবচেয়ে বড় কথা, যৌনতা এবং নগ্নতার প্রকাশ সম্পর্কে আমেরিকার ধারণা বদলে দেন মেরিলিন। বদলে দেন, নগ্নতা নিয়ে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর ভূমিকা নিয়ে যাবতীয় পুরনো ভাবনা-চিন্তাকেও।
সেই ছবিই এ বার প্রদর্শনীতে দেখতে পাবেন সাধারণ মানুষ। ১৩-১৫ অগস্ট লাস ভেগাসে এবং আগামী সেপ্টেম্বরে শিকাগো এবং নিউ ইয়র্কের প্রদর্শনীতেও দেখা যাবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ‘নগ্ন’ ওই মেরিলিনকে।
ছবি: এএফপি, গেটি ইমেজেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy