ভারতে আল কায়েদার নাশকতার ছক ফাঁস হল আমেরিকায়! সেই ছক আবার কষছিল দুই প্রবাসী ভারতীয়ই!
দুই ভাই ইয়াহিয়া ফারুক মহম্মদ আর ইব্রাহিম জুবেইর মহম্মদ আপাতত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর কব্জায়। মার্কিন আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়েছে। হায়দরাবাদ থেকে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেওয়া ফারুক আর জুবেইরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রতারণা করে আল কায়েদার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা এবং ভারতে নাশকতা চালানোর ষড়যন্ত্র করা।
আমেরিকায় গিয়ে আসিফ এবং সুলতানে নামে আরও দুই সঙ্গীকেও জুটিয়ে নিয়েছিল হায়দরাবাদের ফারুক ও জুবেইর। পেশায় দু’জনেই ই়ঞ্জিনিয়ার। দুই ভাই-ই তুখোড় ছাত্র। ফারুক হায়দরাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ১৯৯৯ সালে। তার পর লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আরও উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি মার্কিন মুলুকে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা। ছাত্র যতই তুখোড় হোক, ফারুকের গতিবিধি বরাবরই সন্দেহজনক ছিল এফবিআই-এর চোখে। তাই মার্কিন মুলুকে লেখাপড়া শেষ করে কিছু দিনের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে যখন চাকরি করতে গিয়েছিল ফারুক, তখনও এফবিআই নজর সরায়নি তার উপর থেকে। খুব নামী দু’টি বহুজাতিক সংস্থায় উঁচু পদে চাকরি করেছে ফারুক। ফের কর্মসূত্রেই ফিরেছে আমেরিকায়। কিন্তু জেহাদের প্রস্তুতি তলে তলে চলছিল।
ভাই জুবেইরের উচ্চশিক্ষাও আমেরিকাতেই। ২০০৫ সালে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাঠ শেষ হয় তাঁর। তার পর আমেরিকাতেই থিতু হওয়া। জুবেইরের বিয়েও হয় এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গেই। কিন্তু মার্কিন মুলুকে কাজেকর্মে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলেও সে দেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার কথা ভাবেনি ফারুক-জুবেইর। তাদের ই-মেল কথোপকথন হ্যাক করে এফবিআই জানতে পেরেছে, দুই ভাই মনে করে আমেরিকা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাই সে দেশের নাগরিকত্ব নেওয়া তাদের পক্ষে অনুচিত।
দুই ভাইয়ের মধ্যে নিরন্তর মেল চালাচালি চলত বলে এফবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। অধিকাংশ মেলেই তাদের মধ্যে জেহাদ নিয়ে আলোচনা হত। জেহাদের নামে ভারতে কীভাবে নাশকতা চালানো যায়, তার পরিকল্পনাও মেলেই করছিল দুই ভাই। ফারুক এক বার ইয়েমেন গিয়েছিল বলেও এফবিআই জানিয়েছে। আল কায়েদার তৎকালীন প্রধান আনোয়ার আল আবলাকির সঙ্গে দেখা করতেই ফারুকের সেই ইয়েমেন যাত্রা। আবলাকির দেখা সরাসরি না পেলেও নিজের ঘনিষ্ঠ এক জনকে ফারুকের সঙ্গে দেখা করতে পাঠায়। তার হাতে ২২ হাজার ডলার তুলে দেয় ফারুক।
এফবিআই জানতে পেরেছে দুই ভাই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রতারণা করে এই টাকা জোগাড় করেছিল। নিজেদের মধ্যে মেলে তারা এই প্রতারণার যৌক্তিকতাও নিয়েও আলোচনা করেছে। আমেরিকার মতো ‘ইসলামের শত্রু’ দেশকে আর্থিকভাবে প্রতারণা করে দুর্বল করাও এক ধরনের জেহাদ, যুক্তি ছিল ফারুক-জুবেইরদের।
এফবিআই-এর জালে আটকে পড়ার পর আমেরিকাকে প্রতারণা করে দুর্বল করা বা ভারতে নাশকতার ছক অবশ্য বিশ বাঁও জলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy