ফাঁকা হুমকি নয়, সত্যিই মাটির নীচে পরীক্ষামূলক ভাবে হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দেশ। আর তা এতটাই শক্তিশালী যে গোটা আমেরিকাকে মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জে এমনটাই দাবি করল উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদল।
গত ৬ জানুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ কেঁপে ওঠে দেশের উত্তর-পূর্ব উপকূলের পুঙ্গাই-রি শহর। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে সরকারি টিভি চ্যানেলে ঘোষণা করা হয়, হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ সফল হয়েছে। এ-ও জানানো হয়, জাতে হাইড্রোজেন বোমা হলেও তা তুলনায় কম শক্তিশালী। বলা যায়, ‘ছোট সংস্করণ’। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন ওঠে, আদৌ হাইড্রোজেন বোমা তো! নাকি স্রেফ ফাঁকা হুমকি দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া!
কারণও আছে। বিজ্ঞানীদের হিসেবমাফিক পরমাণু বোমার তুলনায় হাজার গুণ শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। কিন্তু সে হিসেবটা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে মেলেনি। ঘটনার দিন মৃদু ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.১। বিস্ফোরণে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ৬ কিলোটন শক্তি। বিজ্ঞানীদের দাবি, খুব ছোট মাপের হাইড্রোজেন বোমা হলেও অন্তত ১০ কিলোটন শক্তি উৎপাদন হওয়ার কথা। হিরোশিমা-নাগাসাকির পরমাণু বিস্ফোরণে তৈরি হয়েছিল ১৫-২০ কিলোটন শক্তি!
গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জে এর জবাবটাই দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশের সংবাদ সংস্থার পাঠানো একটি রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জে পেশ করেছে প্রতিনিধিদল। তাতে জানানো হয়েছে, ৬ জানুয়ারির ওই পরীক্ষা আদৌ কোনও ‘হুমকি’ নয়। কাউকে প্ররোচনা দিতেও এ কাজ করেনি উত্তর কোরিয়া। শুধু বার্তা দিতে চেয়েছে, তারা পরমাণুশক্তিধর দেশ। আমেরিকাকে জবাব দিতে সক্ষম। রিপোর্টে এ-ও লেখা হয়েছে, ‘‘হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর জন্য উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন উত্তর কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা...। এক মুহূর্তে গোটা আমেরিকাকে উড়িয়ে দিতে পারেন তাঁরা।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, হাইড্রোজেন বোমার বিষয়টি তারা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করছে। তাই উত্তর কোরিয়ার উপর কঠিনতর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ভাবা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব আনা হবে রাষ্ট্রপুঞ্জে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক জানাচ্ছেন, উত্তর কোরিয়াকে ‘পরমাণুশক্তিবিহীন’ করা নিয়ে একমত নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১৫টি সদস্য দেশ। তবে কোন কোন দেশ, জানা যায়নি তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy