নাসিরুল্লা ওরফে সোহেল মাহফুজ। —ফাইল চিত্র।
সোনার কেল্লার রত্ন হাতাতে জাতিস্মর মুকুল ভেবে তার পাড়ার অন্য একটি কিশোরকে অপহরণ করেছিল ভবানন্দ ও তার চেলা। ভুল বুঝে তারা বলে, ‘মিসটেক! মিসটেক!’ ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, ঢাকায় জঙ্গি হাতকাটা নাসিরুল্লা ওরফে সোহেল মাহফুজকে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, একটাই কথা বলছে সে— ‘মিসটেক! মিসটেক!’
বাংলাদেশ পুলিশের হেফাজতে থাকা নাসিরুল্লাকে বুধবারও জেরা করেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে জানা গিয়েছে, জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র পশ্চিমবঙ্গের সদস্যদের বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছিল এই নাসিরুল্লা। প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও ২০১৪-র ২ অক্টোবর জেএমবি-র ওই ডেরায় গ্রেনেড তৈরির সময়ে কী ভাবে বিস্ফোরণ হল— এর উত্তরেই নাসিরুল্লার আফসোস, ‘মিসটেক! মিসটেক!’ তবে মিসটেক-টা ঠিক কী, বলেনি সে। নাসিরুল্লার কাছ থেকে একটি তথ্য জেনে ভারতীয় গোয়েন্দারা উদ্বিগ্ন। তাঁদের বক্তব্য, নাসিরুল্লা ২০০২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ১২ বছরে পশ্চিমবঙ্গের অন্তত শ’দেড়েক ছেলেকে সে বিস্ফোরক প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে জানিয়েছে। এই সব যুবক বীরভূম, বর্ধমান, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।
গোয়েন্দাদের মতে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় এদের বড়জোর ১০ শতাংশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা এখনও অধরা। ভারতীয় গোয়েন্দাদের এখন আশঙ্কা— পশ্চিমবঙ্গে নাসিরুল্লার কাছে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের সংগঠিত করে আইএস পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি কার্যকলাপ চলাতে পারে।
এক গোয়েন্দা অফিসারের বক্তব্য, ২০১৫-য় নাসিরুল্লা আল কায়দা-পন্থী জেএমবি ছেড়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-পন্থী নব্য জেএমবি-তে যোগ দেয়। তবে নাসিরুল্লা ঘোষণা করেছে, নব্য জেএমবি-টেএমবি নয়, সে আইএস-এই যোগ দিয়েছিল। জেএমবি তাকে যে সম্মান দেয়নি, আইএস দিয়েছে। নাসিরুল্লা জানিয়েছে, তাকে ভারতে বড়সড় নাশকতা ঘটাতে বলে আইএস-এর নেতৃত্ব। কিন্তু ডিটোনেটর সময় মতো না-পৌঁছনোয় কিছু করা যায়নি। তবে গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনার কথা সম্ভবত বলেনি নাসিরুল্লা। কথায় কথায় সে বলেছে, অসমে নাশকতা ঘটাতে না-পারার জন্য আফসোস রয়েছে তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy