চাঁদের কক্ষপথে নাসার ‘চন্দ্রযান’ ওরিয়ন। ছবি: রয়টার্স।
চাঁদের কক্ষপথে সফল ভাবে স্থাপন করা হল নাসার ‘চন্দ্রযান’ ওরিয়নকে। শুক্রবার রাতে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কক্ষপথে ঢুকে পড়ার পরে চাঁদের প্রায় ৪০ হাজার মাইল (প্রায় ৬৪ হাজার ৩৭৩ কিলোমিটার) উপরে পাক খাচ্ছে ওরিয়ন। পরবর্তী এক সপ্তাহে চাঁদের কক্ষপথের অর্ধেকটা নাসার ‘চন্দ্রযান’ প্রদক্ষিণ করবে।
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই নাসার মহাকাশযান ‘আর্টেমিস ১’ চাঁদের কক্ষপথের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তার গতি কমিয়ে কক্ষপথে প্রবেশ করানোই ছিল নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে ‘পরীক্ষা’। সেই পর্ব সফল ভাবেই সম্পন্ন হয়। এর পর ‘চন্দ্রযান’ ওরিয়ন চাঁদের কাছে গিয়ে কিছু ছবিও পাঠিয়েছিল। প্রসঙ্গত, কক্ষপথে ঢোকার আগে গতিবেগ না কমালে যেমন তা চাঁদের পাশ কাটিয়ে সৌরমণ্ডলের সুদূরতম প্রান্তে চলে যেতে পারত, তেমনই চাঁদের পাঁচটি কক্ষপথে প্রদক্ষিণের সময় গতিবেগ সফল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এখনও ওরিয়ন আছড়ে পড়তে পারে চাঁদের বুকে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ নভেম্বর সফল উৎক্ষেপণ হয়েছিল ‘অর্টেমিস ১’-এর। ‘আর্টেমিস’ মিশনের মাধ্যমে চাঁদে ফের মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা। মোট তিনটি ধাপে এই মিশন সম্পন্ন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ‘আর্টেমিস-১’-এর মাধ্যমে চাঁদে পাড়ি দিয়েছে যাত্রীবিহীন মহাকাশযান ‘ওরিয়ন’। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য, চাঁদের মাটিতে নামার জন্য সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডিং সাইট’গুলি চিহ্নিত করা।
গত ২৯ অগস্ট উৎক্ষেপণের কথা ছিল ‘আর্টেমিস ১’-এর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ধরা পড়ে রকেটের তরল হাইড্রোজেনের লাইনে ছিদ্র। কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছিল, মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয় তা। ছুটে আসেন ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করা যায়নি। ফলে সে দিন বাতিল করে দেওয়া হয় অভিযান।
উৎক্ষেপণের পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে বার ছিদ্র ধরা পড়ে তরল হাইড্রোজেনের ট্যাঙ্কে। ফলে স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটটির অভিযান আবার বাতিল হয়। বিকল্প হিসাবে ওরিয়ন মহাকাশযানের কথা ভাবা হলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটের উপরেই ভরসা রাখেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
১৯৬৯ সালে ‘অ্যাপোলো-১১’ মিশনে প্রথম চাঁদে পা রেখেছিলেন নাসার মহাকাশচারী নিল আর্মস্ট্রং ও এডুইন অলড্রিন। ১৯৭২ সালে নাসার সালে ‘অ্যাপোলো-১৭’ মহাকাশচারী জেন সারনানকে নিয়ে নেমেছিল চাঁদে। সেই ঘটনার অর্ধশতক পূর্তিতে আবার চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে নাসা। সেই সঙ্গে চাঁদে একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা পরিকাঠামো গড়ে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy